আগাম-দুর্ভোগ: ব্রিগেডের ২৪ ঘণ্টা আগেই বাসের দেখা নেই মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে। শুক্রবার ছবিিট তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে আজ, শনিবার কলকাতার ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা হবে জেলার হাজার হাজার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে নজর দিতে গিয়ে ভোরের কুয়াশাই মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসকদল এবং পুলিশ প্রশাসনের। কুয়াশায় কোনও রকম দুর্ঘটনা এড়াতে শাসকদলের নেতৃত্ব, বাস মালিক এবং কর্মচারী সংগঠনের কর্তাদের বিশেষ ‘নির্দেশ’ দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
জেলা বাস মালিক সংগঠন সূত্রের খবর, এ দিন গভীর রাত থেকেই কলকাতাগামী ব্রিগেড যাওয়ার বাস ছাড়বে। সাড়ে ৬০০ এরও বেশি বাস ছাড়বে জেলার চারটি মহকুমা থেকে, কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে দিঘা, এগরা, খেজুরি, কাঁথি, ভগবানপুর এলাকায় কুয়াশার দাপট বাড়ছে। তাই দুর্ঘটনা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ৪১ নম্বর, ১১৬ বি এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্বে শিবির করা হচ্ছে। সেখানে চিকিৎসকের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পুলিশ থাকবে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাস মালিক এবং স্থানীয় নেতৃত্বদের বলা হয়েছে যে, কুয়াশা দেখলে গাড়ি থামিয়ে ওই শিবিরগুলিতে ‘আশ্রয়’ নিতে। সেখানে খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি জল দেওয়া হবে। এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি বাস শিবিরে আসলে, তাদের ‘এসকর্ট’ করে এগিয়ে দেওয়া হবে। শাসকদল সূত্রের খবর, জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাস স্ট্যান্ড, হেড়িয়া, চণ্ডীপুর, বাজকুল, নন্দকুমার, মেচেদাতে এমন সহায়তা শিবির করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ‘পূর্ব মেদিনীপুর বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র যুগ্ম সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘পুলিশের নির্দেশ সব মালিক মারফৎ চালকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জেলার বাস এবং ছোট গাড়িগুলি কোনও অসুবিধায় পড়লে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে জন্য সবুজ রঙের বিশেষ স্টিকার গাড়ির সামনে লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এ দিকে, এ দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় দূরপাল্লার বাস জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে গড়বেতা থেকে হলদিয়া ফিরে আসার কথা ছিল হলদিয়া রুটের দু’টি বাস। ওই বাসগুলি হলদিয়া এলাকার লোকেদের নিয়ে যাওয়ার জন্য বুক করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বাস দু’টিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় আটকে দেওয়া হয়। হলদিয়া টাউনশিপ সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড আইএনটিটিইউসি নেতা প্রসেনজিৎ ঘড়া বলেন, ‘‘ওই দুটি বাস স্থানীয় নেতৃত্বরা আগে থেকে বুক করেছিলেন। তা সত্ত্বেও সেগুলি গড়বেতায় আটকে রাখা হয়েছে।’’
গড়বেতা-১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘হলদিয়া বা কোনও দূরপাল্লা রুটের বাস আমরা ব্রিগেডের জন্য আটক করিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের একটি বাস প্রথমে আটকানো হয়েছিল। তবে ওই জেলার সভাপতি শিশির অধিকারী ফোন করেছিলেন। তার পরে ওই বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’