রঙ্গ-ব্যঙ্গ: এমনই সব কার্টুনে সাজছে মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
‘আজব রাজা, মারছে প্রজা’, কিংবা ‘রাজার না কি বড় দিল, দশ লাখের কোটের বিল’- এমনই টুকরো টুকরো রঙ্গ-কথায় সেজে উঠছে পুজোর মণ্ডপ। ছবিটা মেদিনীপুর শহরের কলেজ মোড়ের।
কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজোর সঙ্গে বরাবর জড়িয়ে থাকে রাজনীতির আকচাআকচি। এ বারও নোট বাতিল, জিএসটি, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য— নানা ঘটনা ফুটে উঠেছে মণ্ডপের সাজে। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠন প্রভাবিত পুজোয় আক্রমণের নিশানা নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় সরকার। আবার বিজেপির ছাত্র-যুব সংগঠন প্রভাবিত পুজো থিমে বিঁধছে বিরোধী- শিবিরকে। শনিবার দিনভর চলেছে শেষ প্রস্তুতি। আজ, রবিবার থেকেই এখানে পুজোর উদ্বোধনপর্ব শুরু হবে।
মেদিনীপুরের কলেজ মোড়ের একটি পুজোর উদ্যোক্তা, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির কথায়, “নোট বাতিল, জিএসটি-র ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এখনও চলছে। স্বাভাবিক ভাবেই পুজোর থিমে এই সব বিষয় থাকছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে উন্নয়নের প্রতীক, তাও তুলে ধরা হচ্ছে। পাল্টা বিঁধছে ছাড়ছে না বিজেপি। এক পুজোর উদ্যোক্তা, যুব বিজেপির জেলা সভাপতি আশীর্বাদ ভৌমিকের কথায়, “আর কেউ নন। নোট নিয়ে দিদিই ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা করেছেন। এ রাজ্যে মানুষ যে কি দুর্দশায় রয়েছেন তা আমাদের থিমে তুলে ধরব।”
তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়ছে না কংগ্রেসও। এক পুজোর উদ্যোক্তা, ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ- সভাপতি মহম্মদ সইফুলের কথায়, “তৃণমূল আমলে কী চলছে মানুষ দেখছেন। নিরীহ ছেলেও খুন হচ্ছে। পুজোয় এই অরাজকতার ছবিই তুলে ধরব।”
কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজো দেখতে শুধু শহরের মানুষই নন, আশপাশের বহু মানুষ আসেন। পুজোর সকাল থেকে ভিড় জমতে শুরু করে। বেলা যত বাড়ে, পাল্লা দিয়ে ভিড়ও বাড়ে। প্রতিটি পুজোতেই বিভিন্ন মডেলের পাশে ব্যাঙ্গাত্মক লেখা থাকে। শহরের এই এলাকায় প্রায় কুড়িটি পুজো হয়। প্রায় প্রতিটি পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ছাত্র- যুব সংগঠন। কোথাও পুজোর নেপথ্যে টিএমসিপি, সিপি। কোথাও বা এসএফআই, এবিভিপি। পুজোয় উঠে আসে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়।
‘নোট বাতিলের ঠেলায়, জনগণ চড়েছে ভেলায়’, কিংবা ‘গুজরাত দিয়েছে টান, রাজা হবে খান খান’- এমন কথায় সেজে উঠছে পুজোর মণ্ডপ। যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত। থিমের যুদ্ধে কে কাকে টেক্কা দিল, সেটাই দেখার!