বিকেলে স্কুলে দাবিপত্র, রাতে গ্রামে বোমাবাজি

শনিবার বিকেলে নেধুয়া কৃষ্ণবলরাম বিদ্যামন্দিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর স্মারকলিপি জমা দিতে পৌঁছেছিলেন। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল হলেও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সবং শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার মামুলি কর্মসূচি। সেখানেও বোমাবাজির অভিযোগ। আর সেই সূত্রেই প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে নেধুয়া কৃষ্ণবলরাম বিদ্যামন্দিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর স্মারকলিপি জমা দিতে পৌঁছেছিলেন। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল হলেও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রাতে শুরু হয় বোমাবাজি। ঘটনায় আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। রবিবার সকালে গ্রামের বোমার টুকুরো পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সবংয়ের নানা ঘটনায় সাংসদ মানস ভুঁইয়ার অনুগামীদের সঙ্গে জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির ঘনিষ্ঠদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসছে। নেধুয়া কৃষ্ণবলরাম বিদ্যামন্দিরের পরিচালন সমিতিতে অমূল্য ঘনিষ্ঠদের প্রভাব রয়েছে। গোলমালের সূত্রপাত গত সেপ্টেম্বর মাসে। ২৬ সেপ্টেম্বর বিজেপির ডাকা বন্‌ধের দিন স্কুল খোলা নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ চরমে পৌঁছয়। মানস অনুগামী শ্যামপদ কুইল্যা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করকে পরিচালন সমিতি। অভিযোগ, ওই ঘটনায় স্কুলের দুই শিক্ষাকর্মীও যুক্ত ছিলেন। তাঁরা পরিচালন সমিতির কয়েকজন সদস্যকে মারধর করে বলে অভিযোগ। যদিও পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন শ্যামপদরা।

Advertisement

সেপ্টেম্বরে গোলমাল মিটলেও বিবাদ মেটেনি। ঠিক হয়েছিল ৫ জানুয়ারি পুলিশের উপস্থিতিতেই স্কুলে স্মারকলিপি জমা দেবে দু’পক্ষ। সেই মতো শনিবার বিকেলে হাজির হয়েছিলেন শ্যামপদরা। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল তা জানতে চেয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন। পরে পৌঁছন অমূল্য অনুগামীরা। পরিচালন সমিতির সদস্যদের মারধরে জড়িত দুই শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাতে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু মানস অনুগামীরা স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে আসার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়।

শ্যামপদের অভিযোগ, “পরিচালন সমিতির নানা দুর্নীতি নিয়ে আমরা স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলাম। একই সময়ে অশোক চিনিরা সেখানে গিয়ে গোলমাল শুরু করে। রাতে ওঁরা আমাদের কর্মী যুগল বেরার বাড়িতে বোমা মারে।” যদিও ঘটনায় পাল্টা বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অশোক চিনি। তিনি বলেন, “পরিচালন সমিতির সদস্যদের মারধরের প্রতিবাদে আমাদের স্মারকলিপি জমার নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেখানে যেতেই শ্যামপদ কুইল্যার নেতৃত্বে আমাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পরে ওঁরাই এলাকায় বোমাবাজি করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে।” বিষয়টি নিয়ে জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “নেধুয়ায় গত ছ’-সাত মাস ধরে শ্যামপদরা নানা দুষ্কর্ম করছে। আমি বিষয়টি মানস ভুঁইয়াকে জানিয়েও সুফল পাইনি।” যদিও এই ঘটনাটি নিয়ে সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি শনিবার সবংয়ে ছিলাম। এমন খবর পাইনি। খোঁজ নেব।”

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে কিংবা ঘ়টনায় কোনওপক্ষ কোনও অভিযোগ করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন