TMC Leader Arrest Case

বিস্ফোরণে উড়েছিল বাড়ি, মৃত্যু হয় ৩ জনের, সেই ভূপতিনগরেই বোমা তৈরির মশলা-সহ ধৃত তৃণমূলনেতা

ধৃতের নাম সুবীর মাইতি। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িতে বোমা তৈরির মশলা নিয়ে যাওয়ার পথে ভূপতিনগর থানা এলাকায় ধরা পড়েন তিনি। ধৃতের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ কেজি বারুদ ও মশলা উদ্ধার হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৫ ১৫:৫২
Share:

গ্রেফতার ভূপতিনগরের তৃণমূলনেতা সুবীর মাইতি। —নিজস্ব চিত্র।

বছর তিনেক আগে পূর্ব মেদিনীপুরের ভুপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রামপঞ্চায়েতের নায়ড়াবিলা গ্রামে বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল তৃণমূল বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়ি। তৃণমূল নেতা, তাঁর ভাই-সহ আরও এক জনের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ভুপতিনগরেই এ বার বোমা ও বারুদ সরবরাহের অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন তৃণমূলের এক দাপুটে নেতা।

Advertisement

ধৃতের নাম সুবীর মাইতি। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িতে বোমা তৈরির মশলা নিয়ে যাওয়ার পথে ভূপতিনগর থানা এলাকায় ধরা পড়েন তিনি। ধৃতের কাছ থেকে প্রায় ৩৫ কেজি বারুদ ও মশলা উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ভূপতিনগর-২ ব্লকের অর্জুননগর গ্রামপঞ্চায়েতের কমলনয়নবাড় গ্রামে দশকর্মার দোকান চালান সুবীর। ওই ব্যবসার আড়ালে বোমা তৈরির মশলা ও বারুদের কারবার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ-ও জানা গিয়েছে, তৃণমূলনেতা তথা ব্যবসায়ী বোমা তৈরির মশলা গোপনে বিভিন্ন বোমা এবং বাজি তৈরির কারখানায় (অবৈধ) সরবরাহ করতেন। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। ধরা পড়েন এলাকার ‘দাপুটে নেতা’ বলে পরিচিত সুবীর।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, দিন দশেক ধরে তা ভূপতিনগরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। অবৈধ বাজি তৈরিতে রাশ টানাই লক্ষ্য। গত শুক্রবার রাতে ইটাবেড়িয়া বাজারে অবৈধ বাজি তৈরির মশলা নিয়ে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছে প্রায় ৩৫ কেজি বাজি তৈরির মশলা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

তবে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। ময়দানে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির অভিযোগ, “বোমা তৈরির মশলা-সহ তৃণমূলনেতা সুবীর আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সন্ত্রাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। অভিযুক্ত তৃণমূলনেতার সঙ্গে আর যাঁরা জড়িত তাঁদেরও পাকড়াও করতে হবে।’’ রবীন্দ্রনাথের সংযোজন, ‘‘গত ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর রাত ১১টা নাগাদ নায়ড়াবিলা গ্রামে তৃণমূলের বুধ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তাতে রাজকুমার, তাঁর ভাই দেবকুমার ও বিশ্বজিৎ গায়েনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ। একাধিক তৃণমূলনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ বার নতুন করে সুবীর মাইতি বোমার মশলা-সহ পাকড়াও হয়েছেন। এই ঘটনাও এনআইএ-র নজরে আনব। নায়ড়াবিলায় বিস্ফোরণের পরেও যে তৃণমূল বোমা তৈরির কারবার বন্ধ করেনি, এই গ্রেফতারির ঘটনা তারই প্রমাণ।” যদিও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র অপরেশ সাঁতরার দাবি, ‘‘কেউ বেআইনি কাজ করলে আইন মোতাবেক তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তবে ঠিক কী ঘটেছে, আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement