নেতার ফতোয়া শিক্ষকদের

ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া পঞ্চায়েতের শিমুলিয়া গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী ও শিক্ষকেরা। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা মঙ্গলবার শিমুলিয়া গ্রামে বিক্ষোভ-জমায়েত করে প্রতিবাদ জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৫০
Share:

নিম্নমানের জিনিস দিয়েই তৈরি করতে হবে স্কুলের পাঁচিল। এমনই ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ নেতার দাবি মানতে রাজি না হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পাঁচিল তৈরির কাজ। এমনকী শিক্ষকদের শুধু পথেঘাটে অপমান করা নয়, শ্লীলতাহানির মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া পঞ্চায়েতের শিমুলিয়া গ্রামের জুনিয়র হাইস্কুলের ঘটনা। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী ও শিক্ষকেরা। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা মঙ্গলবার শিমুলিয়া গ্রামে বিক্ষোভ-জমায়েত করে প্রতিবাদ জানান।

স্থানীয় সূত্রে খবর, স্কুলের চারপাশে কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। পাঁচিলের জন্য কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের কা‌ছে আবেদন জানিয়ে কাজ না হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেন। তারপরেই কয়েক মাস আগে পাঁচিলের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে শিক্ষা দফতর। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে টেন্ডার ডেকে পাঁচিল তৈরির বরাত দেওয়া হয় এক ঠিকাদারকে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ঠিকাদার স্বপন মহাপাত্র অত্যন্ত নিম্নমানের রড দিয়ে পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন। এতে আপত্তি জানান তাঁরা ও গ্রামবাসী।

Advertisement

অভিযোগ, এরপরই আসরে নামেন তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মাইতি। শিক্ষকদের ডেকে হুমকি দেন, কম দামি রড দিয়েই পাঁচিলের কাজ করতে হবে। নইলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। স্কুলের টিচার ইনচার্জ বিশ্বনাথ সিংহ বলেন, “আমরা রঞ্জিতবাবুকে জানাই, এটা স্কুলের বিষয়, উনি অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ করছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এ কথা বলায় গত ২৭ জুলাই থেকে পাঁচিলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা তোলাবাজি ও শ্লীলতাহানির মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”

রঞ্জিতবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “স্কুলের শিক্ষক ও গ্রামবাসীরা ঠিকাদারের কাছে টাকা চেয়েছিলেন। ধরা পড়ে এখন ওঁরা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ৬ বছর ধরে আমি ওই স্কুলেই যাইনি।” ঠিকাদার স্বপন মহাপাত্র বলেন, “আমি কিছু বলতে পারব না। বিডিও সাহেবকে জিজ্ঞাসা করুন। দলীয় নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মনোরমা পাত্র বলেন, “পাঁচিল তৈরির রডের মান নিয়ে সামান্য সমস্যা হয়েছিল। তবে রঞ্জিতবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

সাঁকরাইলের বিডিও বিবেক ভসমে বলেন, “একটা সমস্যা হয়েছিল। তবে তা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন