গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ অনাস্থা আনায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের ৯জন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনাস্থা আনেন। ওই ৯জনের মধ্যে তিনজন সিপিএম ছেড়ে ও ৬জন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। বারবার আলোচনায় ডেকেও বিষয়টি মীমাংসা করতে পারছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত বিডিওর কাছে সময়সীমাও চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলির পালা।
২০১৩ সালের নির্বাচনে দণ্ডরা পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে ৮টিতে জেতে সিপিএম। ৭টি কংগ্রেস ও একটি আসন পায় তৃণমূল। গোড়ায় তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে সিপিএম। প্রধান হন সিপিএমের মাধব পাত্র। তবে ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পরেই সিপিএমের বাকি পঞ্চায়েত সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দেন। পরে স্থানীয় বিধায়ক মানস ভুঁইয়া-সহ ব্লকের একঝাঁক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দেন। এর পরে দণ্ডরার কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যরাও তৃণমূলে আসেন।
এই অবস্থায় গত ডিসেম্বর থেকেই ওই পঞ্চায়েতে গোলমাল চলছে। পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন জানিয়েছিলেন কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য। তা নিয়ে ব্লক সভাপতি তখন বৈঠক ডাকলেও সাড়া দেননি আবেদনকারী ওই পঞ্চায়েত সদস্যরা। এ বার তাঁরাই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনাস্থা এনেছেন। এবং নিজেদের কংগ্রেস ও সিপিএম সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে আসা পঞ্চায়েত সদস্য অনন্ত সিংহ বলেন, “আমাদের পঞ্চায়েত প্রধান নানা দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের সঙ্গে যুক্ত। আমরা তাই ওঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি। আর আমরা এখন তৃণমূল হলেও যেহেতু অন্য দলের প্রতীকে জয়ী হয়েছিলাম তাই সেই অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছি।”
দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান মাধব পাত্র বলেন, “কেন তৃণমূলে এসেও নিজেদের কংগ্রেস-সিপিএম বলে ওঁরা এসব করছে এর উদ্দেশ্য বুঝে পাচ্ছি না।” আর কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডার বক্তব্য, “আমাদের নেতা প্রভাত মাইতি। উনিই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাত মাইতি বলেন, “আমাদের বিডিও ২৯ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। তার মধ্যে আলোচনায় বসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করব।”