WB Panchayat Election 2023

৪৩ জন নির্দল সাসপেন্ড তৃণমূলে

বৃহস্পতিবার তমলুকে তৃণমূল জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের জেলা সংগঠনিক সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ওই নেতাদের ‘সাসপেন্ড’ করার কথা ঘোষণা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ০৭:০৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থীপদ না পেয়ে নির্দল হয়ে লড়াই করা তৃণমূলের পদাধিকারী নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পথে হেঁটে কয়েকদিন আগেই দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্দল হয়ে দাঁড়ানো কাঁথি সাংগঠনিক জেলার কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কার করেছিল জেলা নেতৃত্ব। এবার তমলুক সাংগঠনিক জেলায় নন্দীগ্রামের এক জেলাপরিষদ সদস্য সহ ৪৩ জন নেতা-নেত্রীকে দল থেকে ‘সাসপেন্ড’ করলেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এর মধ্যে শুধুমাত্র নন্দকুমার ব্লকেই এক বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান সহ ২৪ জন নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার তমলুকে তৃণমূল জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের জেলা সংগঠনিক সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র ওই নেতাদের ‘সাসপেন্ড’ করার কথা ঘোষণা করেন। রাজ্য নেতৃত্বের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ওই নেতাদের বিরুদ্ধে ‘সাসপেনশন’ বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন সৌমেন। সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘প্রথম দফায় ৪৩ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে । আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপকরা হবে।’’

এবার তৃণমূলের প্রার্থী চূড়ান্ত করার পরে একেবারে শেষ পর্যায়ে মনোনয়ন জমার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দলের একাংশের ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামলাতে ও নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমার প্রবণতা এড়াতে ওই কৌশল নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। তার পরেও দলের একাংশ নেতা-কর্মী নির্দল হিসাবে লড়াই করছেন। ভোট গ্রহণের আগেই ওই বিক্ষুদ্ধ নেতা-নেত্রীদের সাসপেন্ড করা হল। সাসপেন্ড হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের বিদায়ী জেলা পরিষদ সদস্য নাসিমা খাতুন ও তৃণমূলের মহিলা সংগঠন ‘বঙ্গ জননী’র নন্দীগ্রাম -১ ব্লকের সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন। নাসিমা এবার জেলা পরিষদের আসনে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়াই করছেন। সাবিনা পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে নির্দল প্রার্থী। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে লড়াই করা বিদায়ী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সঞ্চিতা প্রধান দে, অঞ্চল যুব সভাপতি শেখ আরিফ, পার্টি সদস্য শেখ কাজাহার ও আফসানা বিবিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নন্দকুমার ব্লকে সবচেয়ে বেশি সাসপেন্ড করা হয়েছে। ওই তৃণমূল নেতার মধ্যে রয়েছে সাওড়াবেড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ভোলানাথ ধাড়া, কুমরাড়া পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্য গৌরীরানি দাস পাল ও নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সদস্য গঙ্গোত্রী বর্মন, সুশীলা মাইতি, গঙ্গা হাজরা বর্মন, এসসি-এসটি সেলের ব্লক কমিটির সদস্য শ্যামল বর্মন, পঞ্চায়েতের সদস্য সবিতা প্রধান ও বুথ সভাপতি গৌরীশঙ্কর মাইতি, আসরাফ আলি,পিনাকী সামন্ত রয়েছেন।

Advertisement

তমলুক ব্লকের তিনজন সাসপেন্ড নেতা হলেন পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ পিনাকী দাস ও তাঁর স্ত্রী রীনা দাস, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পিপুলবেড়িয়া-১ অঞ্চল সভাপতি কার্তিক রথ। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বুথ কমিটির সদস্য দুই নেতা তরুণ মণ্ডল, নয়ন মণ্ডল, পার্টি সদস্য শেখ ফিরোজ আলি ও লুতফর রহমানকে। ময়না ব্লকের সাসপেন্ড নেতারা হলেন, পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি শেখ সাহাজাদা ও চার পার্টি সদস্য। কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ পাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিশ্বজিৎ জেলাপরিষদের আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। হলদিয়া ব্লকের পঞ্চায়েতের আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করা পার্টি সদস্য মানবেন্দ্র দিন্দাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

কিন্তু কী বলছেন সাসপেন্ড হওয়া নির্দল প্রার্থীরা!

দলের এমন পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ তাঁরা। দলে আর না ফেরানো হলে কী করবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে এক নির্দলের সহাস্য জবাব, ‘‘হিন্দিতে একটা কথা আছে জানেন তো! যো জিতাওহি সিকন্দর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন