জয়ের পর।—নিজস্ব চিত্র।
টানা ৩৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ঘাটাল পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। এ বার তৃণমূলের প্রতীকে এই ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়েছিলেন ঘাটাল কলেজের টিচার ইনচার্জ লক্ষ্মীকান্ত রায়। কলেজের শীর্ষ পদে থেকে সরাসরি পুরভোটে শাসক দলের প্রতীকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে সমলোচনার ঝড় উঠেছিল। কিন্তু শেষ পযর্ন্ত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাম যুগের অবসান ঘটানোর পর স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত লক্ষ্মীকান্তবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে কলেজই আগে। তবে যেহেতু মানুষের রায়ে জিতেছি, তাই একটা দায়বদ্ধতা তো এসেই গেল।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবরই ঘাটালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড সিপিএম জিতে আসছে। এক কথায়, নিবার্চন প্রক্রিয়া শুরু থেকেই ওই ওয়ার্ডটি সিপিএমেরই দখলে। এই ওয়ার্ডটি ঘাটালের প্রাণকেন্দ্র। হাসপাতাল, কলেজ-সহ সরকারি একাধিক মহকুমা স্তরের অফিসও এই ওয়ার্ডেই। এবার ঘাটাল পুরসভায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের পাশাপাশি লড়াইয়ে ছিল সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল। তবে লক্ষ্মীকান্তবাবুর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন নির্দল প্রার্থী অনুপ চক্রবর্তী এবং সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর শ্রীকৃষ্ণ শীল। লক্ষ্মীকান্তবাবু, শ্রীকৃষ্ণবাবুকে ৪৫ ভোটে হারিয়ে জয়ী হন।
এই ওয়ার্ডে জয়ের খবর পেয়ে বুধবার উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দলের এক নেতার কথায়, “ঘাটাল পুরসভায় একক ভাবে দশটি আসন দখল করে তৃণমূল খুশি। কিন্তু এই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডটি সিপিএমের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পেরেছে দল। তাতে আমরা আরও খুশি।” আর ঘাটাল শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুণ মণ্ডলের কথায়, ‘‘১৬ নম্বর ওয়ার্ড আমাদের পাখির চোখ ছিল। তৃণমূলকে জেতানোর জন্য বাসিন্দাদের ধন্যবাদ।’’
কিন্তু ৩৫ বছরের এমন জোরদার আসন বামেরা হারাল কী ভাবে? এর জন্য কি বামেদের সংগঠনের অভাবই দায়ী?
সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক উত্তম মণ্ডল বলেন, ‘‘মাত্র ৪৫ ভোটে হার এমন কিছু নয়। পাঁচজন প্রার্থীর সঙ্গে লড়াইয়ে সকলেই কম বেশি ভোট পেয়েছেন। ভোট কাটাকাটির জন্যই এমন ফল। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় না, এলাকার বাসিন্দাদের সমর্থন আমাদের সঙ্গে নেই।’’