অরবিন্দ স্টেডিয়ামে চলছে প্রস্তুতি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
আইএফএ- র ক্লাব ফুটবল ফাইনাল ঘিরে উত্তেজনায় ফুটছে শহর মেদিনীপুর।
আজ, রবিবার মেদিনীপুর অরবিন্দ স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হবে উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর তরুণ সঙ্ঘ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষুদিরামনগর সুভাষ কর্নার। খেলা শুরু বিকেল সাড়ে তিনটেয়। শেষ হাসি কে হাসবে, জানা যাবে ফাইনাল শেষেই। অবশ্য গতি আর টেকনিকে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছে দু’দলই। মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিনয় দাস মাল বলেন, “ফাইনাল নিয়ে আমরা সকলেই খুব এক্সসাইটেড। দু’দলই ভাল। দু’দলের খেলাতেই একটা ঝাঁঝ আছে।”
দু’দলই চাইছে রক্ষণে তালা লাগিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করতে। তাহলে অন্তত বিপক্ষকে চাপে রাখা যাবে। ক্রীড়া- কর্তাদের একাংশ মানছেন, ধারে- ভারে অবশ্য বেশ কিছুটা এগিয়ে শ্যামনগরের ক্লাবটিই। কারণ, এই দলে বড় ক্লাবে খেলা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ফুটবলার রয়েছেন। একাধিক ফুটবলার জাতীয় দলের জার্সি গায়েও মাঠে নেমেছেন। অবশ্য অরবিন্দ স্টেডিয়াম সুভাষ কর্ণারের ঘরের মাঠ। ঘরের মাঠে খেলার একটা আলাদা অ্যাডভান্টেজ রয়েছে।
আইএফএ- র উদ্যোগে এই ক্লাব ফুটবল লিগ। প্রত্যেক জেলার সেরা ক্লাব লিগে যোগ দেয়। আগেই লিগ পর্যায়ের খেলা হয়ে গিয়েছে। মেদিনীপুরে শুরু হয়েছিল চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা। দু’টো সেমিফাইনাল হয়ে গিয়েছে। আজ, রবিবার ফাইনাল। প্রথম সেমিফাইনালে দুর্গাপুরের পলাশডিহা আদিবাসী স্পোর্টিং ক্লাবকে ৪- ১ গোলে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে সুভাষ কর্নার। অন্য দিকে, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শিলিগুড়ির মহানন্দা স্পোর্টিং ক্লাবকে ১- ০ গোলে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে তরুণ সঙ্ঘ।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে শুরু হয় রাজ্য ক্লাব লিগ। জেলার সেরারা নামে রাজ্য সেরা হওয়ার লড়াইয়ে। জেলার দলগুলোকে চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। প্রতিটি দল তার গ্রুপের বাকি দলগুলোর বিরুদ্ধে একটি হোম ম্যাচ এবং একটি অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে। চারটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পায়।
মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক বিদ্যুৎ বসু বলেন, “সেমিফাইনাল দেখে মনে হয়েছে, দু’দলের ফুটবলাররাই বেশ ছন্দে রয়েছে। দু’- একটা দিক একটু নড়বড়ে রয়েছে ঠিকই। তবে তাতে খেলার ঝাঁঝ ফিকে হবে না।” তাঁর কথায়, “শ্যামনগরের দলটা ভাল। তবে যে দল গোড়াতেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে, সেই দল কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে।”
শহর মেদিনীপুরে এক সময় লিগের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে ভিড়ও হত। প্রথম, দ্বিতীয় বিভাগীয় লিগে গ্যালারি ভর্তি সমর্থক থাকত। অবশ্য দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে ফুটবল ঘিরে সেই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। জেলার ক্রীড়া- কর্তাদের অবশ্য আশা, ক্লাব ফুটবল ফাইনালে দর্শকদের ভিড় হবে।
আগের সেই উৎসাহ নেই মেনে নিয়েও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিনয় দাস মাল বলছেন, “মেদিনীপুরে হারিয়ে যাওয়া ফুটবল উন্মাদনা ফেরানোর সব রকম চেষ্টা করছি।” সেমিফাইনালের পাহাড় ডিঙিয়েছে দু’দলই। এ বার ফাইনাল। পশ্চিম মেদিনীপুর না উত্তর ২৪ পরগনা, কোন জেলার ক্লাব রাজ্য সেরা হয়, সেটাই দেখার।