ভেঙে ফেলা হয়েছে সৈকতের পথে রাস্তা দখল করে থাকা দোকানপাট।
পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে দিঘাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে দিঘায় সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। তারই অঙ্গ হিসেবে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত নিউ দিঘায় কয়েকশো ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদ করা হল। দিঘাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্রে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এমন পদক্ষেপে খুশি পর্যটকেরাও।
নিউ দিঘার প্রধান পিচ রাস্তা থেকে সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার জন্য একাধিক রাস্তা রয়েছে। ওই সব রাস্তা এমনিতেই সরু হওয়ায় ছোট যান এবং পর্যটকদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। যানজটে নাজেহাল হচ্ছিলেন পর্যটকেরা। তার উপর রাস্তার দুই দিকে ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকান বসে থাকায় সমস্যা আরও বাড়ার পাশাপাশি দিঘার সৌন্দর্যের ক্ষেত্রেও বেমানান ছিল বলে অভিযোগ। দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে খবর ওই সব অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়িগুলির জন্য নিউ দিঘার সৈকতশ্রী মার্কেটে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। সেই অনুযায়ী ১০৮৭টি স্টল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই সব স্টলে বিদ্যুৎ না পৌঁছনোয় অস্থায়ী দোকানদাররা সেখানে না গিয়ে রাস্তাতেই বসছিলেন। তবে ইতিমধ্যে ওই স্টলগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ এসে যাওয়ায় সেগুলির চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে দোকানদারদের হাতে। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও নানা অজুহাতে ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকানদাররা তাঁদের দোকান সরাচ্ছিলেন না। তাই এদিন পর্ষদের পক্ষ থেকে ওই সব ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকান ভেঙে দেওয়া হয়।
নিউ দিঘার এক স্টুডিও ব্যবসায়ী দেবব্রত আদক নতুন স্টল পাননি। তিনি বলেন, “আট বছর ধরে দিঘায় দোকান করছি। কিন্তু ২০১২-‘১৩ সালে হকারদের যে তালিকা তৈরি হয়েছিল তাতে আমার নাম ছিল না। তাই স্টল পাইনি। এখন কোথায় যাব?” পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, “নির্দিষ্ট তালিকা থেকেই পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। যাঁরা স্টল পাননি, তাঁদের বিষয়ে পর্ষদের বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দিঘার সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে কোনও ঝুপড়ি বা অস্থায়ী দোকান বাধা হয়ে দাঁড়ালে তা বরদাস্ত করা হবে না।’’
তবে রাস্তা থেকে ঝুপড়ি উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে খুশি পর্যটকেরা। কলকাতার বেহালার বাসিন্দা সমীরণ রায় বলেন, “দিঘা ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে যাচ্ছিল। এখন ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়ির জন্য রাস্তায় চলাফেরাতেও অসুবিধা হচ্ছিল। দিঘার সৌন্দর্য্য বাড়াতে এর প্রয়োজন ছিল। তবে জীবিকার স্বার্থে ওই সব দোকানদারদের পুনর্বাসন দেওযা উচিত।’’ নিউ দিঘা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অশোক চন্দ্র বলেন , “ইতিমধ্যে বেশিরভাগ ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকানদাররা স্টল পেয়েছে। কিছু দোকানদার তা পাননি। আমরা পর্ষদকে তাঁদের বিষয়ে বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছি ।’’