খড়্গপুরে ক্ষোভ প্রকাশ

ট্রেন চলছে দেরিতেই, যাত্রী-দুর্ভোগ

আগের মতোই খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর মুখে দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন। ফলে খড়্গপুর স্টেশনে যে সময়ে ঢোকার কথা, তার থেকে অনেকটা দেরিতে খড়্গপুরে ঢুকছে বিভিন্ন এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

আধুনিক ইলেকট্রনিক্স রুট ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালুর পর সময়ে ট্রেন চালানো যাবে বলে দাবি করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। হয়রানি কমার আশা করেছিলেন যাত্রীরাও। তবে নতুন ব্যবস্থা চালুর পর দশ দিন কেটে গেলেও এখনও খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকার মুখে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ চলছেই।

Advertisement

শুধু লোকাল বূা প্যাসেঞ্জার ট্রেন নয়, দেরির তালিকায় রোজ নাম উঠছে এক্সপ্রেস ট্রেনেরও। সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকার কথা টাটানগর-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেসের, বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ স্টেশনে ঢোকে ট্রেনটি। শুধু বুধবার নয়, প্রায়ই স্টিল এক্সপ্রেস দেরিতে চলছে বলে অভিযোগ। কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী খড়্গপুরের বাসিন্দা সন্দীপন বসু বলছিলেন, “অফিসে সাড়ে দশটার মধ্যে পৌঁছতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন ট্রেন আসতে দেরি হওয়ায় ১১টাতেও অফিস পৌঁছতে পারছি না। দেরিতে ট্রেন চলার সমস্যা কবে মিটবে কে জানে? ”

নতুন ইলেকট্রনিক্স রুট ইন্টারলকিং ব্যবস্থা চালুর পর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এসএন অগ্রবাল দাবি করেছিলেন, এই ইন্টারলকিং ব্যবস্থার পরিবর্তনের ফলে সময়ে চলবে ট্রেন। বাস্তবে অবশ্য ছবিটা বদলায়নি। আগের মতোই খড়্গপুর স্টেশনে ঢোকা-বেরনোর মুখে দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন। ফলে খড়্গপুর স্টেশনে যে সময়ে ঢোকার কথা, তার থেকে অনেকটা দেরিতে খড়্গপুরে ঢুকছে বিভিন্ন এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন।

Advertisement

টাটানগর বা আদ্রা থেকে খড়্গপুরগামী ট্রেনগুলি নিমপুরা অথবা গিরি ময়দান স্টেশনের পরে দীর্ঘক্ষণ থাকছে বলে অভিযোগ। সমস্যা সবচেয়ে বেশি টাটানগর-খড়্গপুর রুটে। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা স্টিল এক্সপ্রেসের যাত্রী সত্যজিৎ মাহাতোর অভিযোগ, তিনি কলকাতার একটি স্কুলের শিক্ষক। প্রতিদিন এই স্টিল এক্সপ্রেসে যাতায়াত করেন। কিন্তু দু’বেলাই নিমপুরার কাছে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকছে। ট্রেন দেরি করায় স্কুলে তিনি সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারছেন না। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘১৬ দিন ধরে ভোগান্তির পরে রেলের থেকে এটাই কি প্রাপ্তি?”

মেদিনীপুর-হাওড়া রুটেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। হাওড়া যাওয়ার জন্য গিরিময়দান স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেনে ওঠেন খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা সোমা দাস। তাঁর অভিযোগ, প্রতিদিন ট্রেনে মেচেদায় অফিসে যাই। গিরিময়দান থেকে ঠিক সময়ে ছাড়লেও খড়্গপুরে ঢোকার আগে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকছে।

রেল আধিকারিকদের অবশ্য দাবি, যাত্রাপথে নানা কারণে ট্রেন দেরি হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে নিমপুরায় কেন ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ছে? রেল কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। বুধবার স্টিল এক্সপ্রেস দেরি হওয়ায় স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা। খড়্গপুর-মেদিনীপুর-হাওড়া নিত্যযাত্রী সমিতির সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “প্রতিটি ট্রেন খড়্গপুরে ঢুকতে দেরি করছে। মৌখিকভাবে স্টেশন মাস্টারকে বিষয়টি জানালাম। এর পরে রেলবোর্ডেও জানাব।”

এ নিয়ে খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি দাবি করছেন, নানা কারণে দূরপাল্লার ট্রেন দেরি করছে। ইন্টারলকিং ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে দেরি হচ্ছে না। নিমপুরায় ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি তিনি দেখবেন। খড়্গপুরের স্টেশন মাস্টার দেবেন্দ্রকুমার পণ্ডা অবশ্য বলছেন, “যাত্রীদের ক্ষোভের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানাব। মনে হচ্ছে, ইন্টারলকিং ব্যবস্থার বদলের পরে অনেক প্রবীণ কর্মীর বিষয়টি বুঝতে সময় লাগছে। তাই সাময়িক ভাবে সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন