শুক্রবার বন্দরে বিক্ষোভকারীরা। নিজস্ব চিত্র
ট্রান্সপোর্টারদের (লরি চালক এবং মালিক) লাগাতার ধর্মঘটে হলদিয়া বন্দরে ফিরছে ‘এবিজি বিদায়ে’র স্মৃতি!
২০১১ সালে কর্মী ধর্মঘটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বন্দরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। বন্দর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল ‘এবিজি’ সংস্থা। গত শুক্রবার থেকে চলা ট্রান্সপোর্টারদের ধর্মঘটে সেই পরিস্থিতি ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন পণ্য আমদানিকারীরা।
শুক্রবারই এক সপ্তাহে পড়ল ট্রান্সপোর্টারদের ধর্মঘট। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। চরম সঙ্কটে পড়েছেন আমাদানিকারীরা। স্থানীয় সূত্রের খবর, আজ, শনিবার বন্দরে বহু আমদানিকারীর প্লটের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পণ্য বা কাঁচামাল খালি না হওয়ায় নতুন করে আবার প্লট ধরে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষকে কয়েক লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আমদানিকারীরা।
এক আমদানিকারীর কথায়, ‘‘মার্চের শেষে বিভিন্ন সংস্থার কর্তৃপক্ষেরা চান বেশি করে কার্গো বা কাঁচামাল মজুত করে রাখতে। কিন্তু গত কয়েক আমার সেই কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছি।’’ আর একজনের কথায়, ‘‘কারখানা কাঁচামাল চেয়ে চাপ দিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে বেশি দামে কেনা মালপত্র কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে লোকসান বাড়ছে।’’
এ দিন সকালেও বন্দরের গেটে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। বন্দরে ঢোকা-বার হওয়ার সময় কার্ড (আরআইডিএফ) জমা এবং সেই সংক্রান্ত জরিমানার অভিযোগে তাঁরা অনড়। যদিও বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আরআইডিএফ কার্ড নিয়ে ট্রান্সপোর্টারদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হচ্ছে না।
বন্দর কর্তৃপক্ষের ওই দাবি অস্বীকার করেছেন বিক্ষোভকারীরা। শেখ রাজু নামে এক ট্রান্সপোর্টার নেতা বলেন, ‘‘দাবি মানা হয়নি। উল্টে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।’’ বন্দর সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে কলকাতা বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান জি সেন্থিলভেলের হলদিয়ায় যাওয়ার কথা। তখন এই ধর্মঘটের দাবির ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার (ট্র্যাফিক) স্বপন কুমার সাহারাইয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে হলদিয়ার জেনারাল ম্যানেজার (প্রশাসন) অমল দত্ত বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমস্যা খতিয়ে দেখছে। এখনই কিছু বলা যাবে না।’’