ফাইল চিত্র।
পুজোর সময় প্রতি বছর রক্তের আকাল তৈরি হয়। কারণ এই সময় ছুটির জন্য নিয়মিত রক্তদান শিবির আয়োজনে ঘাটতি থাকে। রক্তের এ হেন সঙ্কটে সমস্যা পড়েছেন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তেরা। সোমবার হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে এমনই একটি ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। সেখানে রক্তের অভাবে প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আরতি মিদ্যা (৫৫) নামে সুতাহাটা ব্লকের আশাদতলিয়া গ্রামের ওই প্রৌঢ়াকে রবিবার রক্ত দেওয়া কথা ছিল। সেইমতো পরিবারের লোকেরা তাঁকে হাসপাতালে এনেছিলেন। পরিবারের দাবি, ‘বি’ নেগেটিভ রক্তের দরকার ছিল। কিন্তু হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক জানিয়ে দেয়, ওই রক্ত তাদের কাছে নেই। ফলে রোগীকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায়, রবিবার রাতেই তাকে চৈতন্যপুরে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তাঁর জন্য রক্ত চেয়ে বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের দ্বারস্থ হয় পরিবার। সেই মত খবর পেয়ে সোমবার ময়নার বাসিন্দা বিধান মাইতি নামে এক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। অভিযোগ, তাঁর রক্ত নেওয়া হয়নি। কর্মীর অভাব দেখিয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
যদিও হাসপাতাল ও ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, নেগেটিভ রক্ত সব সময় মজুত থাকে না। তাই একদিন আগে যোগাযোগ করতে হয়। তা ছাড়া, এই ধরনের রক্ত মেলার সম্ভাবনা কম থাকায়, দাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় রোগীর পরিবারকে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে মধুসূদন পড়্যা বলেন, ‘‘ওই রোগীকে হলদিয়া ও তমলুক ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত নেই বলে জানিয়েছিল। তারপর ওই রোগীর প্রয়োজনীয় রক্ত সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু জেলা সদর হাসপাতালের গড়িমসির জন্য রক্তদাতা সময়ে চলে এলেও রক্ত পেতে অনেকটা দেরি হয়।’’
অভিযোগ মানতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্যআধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল জানান, রক্তদাতা হলদিয়ায় গিয়ে রক্ত দিতে পারতেন। তা ছাড়া, হলদিয়ার রোগীর বাস্তবে ওই রক্ত লাগবে কিনা, সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় কিছু সমস্যা হয়েছিল। তবে পরে তা মিটে যায়। রোগীকেও রক্ত দেওয়া হয়েছে।