ফের ধর্মঘট, অচলাবস্থা  চলছে বন্দরে

আর এক আমদানিকারীর কথায়, ‘‘বন্দর থেকে ম্যাঙ্গানিজ, কয়লা, আকরিক প্রভৃতি কাঁচামাল শুধু হলদিয়া নয়, দুর্গাপুর, খড়্গপুর, আসানসোলে পাঠানো হত। দৈনিক অন্তত ৫০০ টন কাঁচামাল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ধর্মঘটের জেরে তা সম্ভব হচ্ছে না।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

কর্মবিরতি: সার দিয়ে দাঁড়িয়ে লরি। নিজস্ব চিত্র

মাঝে একদিনের বিরতি। তার পরেই ফের ধর্মঘট চালু রাখল পণ্যবাহী লরি সংস্থাগুলি (ট্রান্সপোর্টারেরা)। যার জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে হলদিয়া বন্দরে।

Advertisement

গত শুক্রবার থেকে বন্দরে ঢুকছিল না কোনও লরি। বন্দরের বার্থগুলিতেই পড়ে রয়েছে কাঁচামাল। ফলে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন হলদিয়ার বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বুধবার থেকে ফের ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

বন্দরে লরি ঢোকা ও বেরোনোর সময় চালকদের কার্ড জমা দেওয়ার নিয়ম চালু করেছেন হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, লরির গতিবিধি জানতে তাতে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম লাগানো হয়েছে। পুরো ব্যাপারটি সামলায় একটি বেসরকারি সংস্থা। লরিচালকদের অভিযোগ, নিয়মিত কার্ড জমা দেওয়া হলেও তাঁদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, জিপিএসের নামেও হয়রানি করা হচ্ছে। ওই সব অভিযোগেই ধর্মঘট ডেকেছেন তাঁরা।

Advertisement

‘প্রোগ্রেসিভ লরি ওনার্স ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি উৎপল জানা বলেন, ‘‘কার্ড নিয়ে মোটা টাকা আদায় করা হচ্ছে। বন্দরে কাজের পরিবেশ নেই। তাই আমরা মাল ওঠানো-নামানো বন্ধ রেখেছি।’’ ট্রান্সপোর্টার সংস্থার সঙ্গে জড়িত নাসিম আখতার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমরা সকলে ১১ দফা দাবি জানিয়েছি কর্তৃপক্ষকে। সোমবার দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও মঙ্গলবার কোনও বৈঠক হয়নি। বাধ্য হয়ে এ দিন ফের ধর্মঘট ডেকেছি।’’

কার্ড এবং ট্র্যাকিং সিস্টেমের জন্য জরিমানা হিসাবে ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই সংস্থা। এ ব্যাপারে সাইট ইঞ্জিনিয়ার গণেশ কুমার বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই জরিমানা আদায় করা হয়।’’

এ দিকে, ধর্মঘটে মাথায় হাত পড়েছে আমদানিকারীদের। কয়েক কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বড় বড় দু’একটি সংস্থা বাদ দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ৫০ জনেরও বেশি আমদানিকারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আমদানিকারী বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে লরি ঢুকছিল না। মঙ্গলবার সামান্য কাজ হয়েছিল। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। কাঁচামাল কারখানায় পাঠাতে না পারায় অনেক টাকা লোকসান হচ্ছে।’’

আর এক আমদানিকারীর কথায়, ‘‘বন্দর থেকে ম্যাঙ্গানিজ, কয়লা, আকরিক প্রভৃতি কাঁচামাল শুধু হলদিয়া নয়, দুর্গাপুর, খড়্গপুর, আসানসোলে পাঠানো হত। দৈনিক অন্তত ৫০০ টন কাঁচামাল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ধর্মঘটের জেরে তা সম্ভব হচ্ছে না।’’

বন্দরে এমন অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কী করণীয় তা প্রশাসন শ্রমিক সংগঠনগুলিকে জানিয়েছে। আশা করি সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।’’ জট কাটানোর জন্য সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার (ট্র্যাফিক) এস কে সাহারাই বলেন, ‘‘ট্রান্সপোর্টাররা সমস্যার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছেন। বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন