শেখ ইদ্রিস ও শেখ মহম্মদ আলি
ফের ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল এ রাজ্যের দুই শ্রমিকের। অসমের গুয়াহাটির দুমদুমা থানা এলাকায় গত শনিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। ডুমডুমা থানার পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের নাম শেখ ইদ্রিস (৫৪) ও শেখ মহম্মদ আলি। (৫১)।
পুলিশ সূত্রে খবর, ডুমডুমা সেন্ট মেরিজ স্কুলে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। শনিবার রাতে সেখানকার নির্মাণকর্মীদের শিবিরে শ্রমিকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। শেখ ইদ্রিস, শেখ মহম্মদ ও শেখ মুস্তাক নামে এ রাজ্যের তিন শ্রমিকের সঙ্গে পেঙেরির বাসিন্দা রাজু গৌড়ের ঝগড়া বাধে। ঝগড়ার মধ্যেই রাজু কুড়ুল দিয়ে তিনজনকে কোপাতে শুরু করে। শেখ ইদ্রিস ও শেখ মহম্মদ ঘটনাস্থলেই মারা যান। রাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি, নিজেদের মধ্যে গোলমাল থেকে মারপিটেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ইদ্রিসের বাড়ি পাঁশকুড়ার সিদ্ধা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালনগর গ্রামে। শেখ মহম্মদের বাড়ি পাঁশকুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গড় পুরুষোত্তমপুরে। মৃত দু’জনেরই পরিবারের লোকজনের দাবি, ইদ্রিস ও মহম্মদকে খুন করা হয়েছে।
তমলুকের সার্কেল ইন্সপেক্টর স্বরূপ বসাক পাঁশকুড়া থানার ওসিকে নিয়ে দুমদুমা থানায় যোগাযোগ করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ দুটি রবিবার ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। সোমবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে মৃতদেহ দুটি। দু’জনের পরিবার তিনসুকিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গিয়েছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে খবর, শেখ ইদ্রিস পেশায় রাজমিস্ত্রি। শেখ মহম্মদ আলি নির্মাণ শ্রমিক। পাঁশকুড়ার বাসিন্দার শেখ ইদ্রিস, শেখ মহম্মদ আলি, শেখ সোনু ও সৈয়দ রহিম অসমে এক ঠিকাদারের অধীনে নির্মাণ কাজে যুক্ত ছিলেন। দুমদুমা থানার কাছে দুমদুমা গ্রামে একটি ভাড়া বাড়িতে তাঁরা থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। শেখ মহম্মদ আলি প্রায় ৮ বছর ধরে অসমে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন বলে পরিবারের দাবি। ছুটি কাটিয়ে সাতদিন আগে তিনি পাঁশকুড়া থেকে অসম রওনা হন। ইদ্রিস মাস দেড়েক হল ওখানে কাজে গিয়েছিলেন।
মৃতদের পরিবারের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় কয়েকজন সশস্ত্র দুষ্কৃতী ইদ্রিসদের ঘরে হামলা করে। জানতে চায় তারা কোন রাজ্যের। বাঙালি সংখ্যালঘু জানার পরই দুষ্কৃতীরা শেখ ইদ্রিশ ও শেখ মহম্মদ আলিকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায় বলে অভিযোগ। শেখ সোনু সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে দুষ্কৃতীরা তাঁকেও ছুরি মারে বলে অভিযোগ। সোনু গৌহাটিতে চিকিৎসাধীন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। সৈয়দ রহিম সে সময় বাজারে গিয়েছিলেন কেনাকাটা করতে। তিনি ফিরে ইদ্রিশ ও শেখ মহম্মদকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।