সংস্কারের জালে কোপ ঐতিহ্য ভবনেও, ক্ষোভ

বাংলা নববর্ষে আত্মপ্রকাশ করবে নতুন জেলা ঝাড়গ্রাম। তার আগে মহকুমা আদালতের বিভিন্ন ভবন ও চত্বর ঢেলে সাজা হচ্ছে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৪
Share:

মহকুমা আদালত। নিজস্ব চিত্র।

বাংলা নববর্ষে আত্মপ্রকাশ করবে নতুন জেলা ঝাড়গ্রাম। তার আগে মহকুমা আদালতের বিভিন্ন ভবন ও চত্বর ঢেলে সাজা হচ্ছে। এ জন্য প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শুরু হয়েছে কাজও। পূর্ত দফতরের তরফে বরাত পাওয়া চারজন ঠিকাদার সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ করছেন। যদিও মহকুমা আদালতের শতবর্ষ ছুঁইছুঁই হেরিটেজ ভবনটির দু’পাশের অংশ ভেঙে সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী ও আদালত কর্মীদের একাংশ।

Advertisement

মহকুমা আদালত চত্বরের মধ্যে একাধিক এজলাস ও ভবন রয়েছে। এর মধ্যে আদালতের সবচেয়ে পুরনো ভবনটিতে রয়েছে দু’টি দেওয়ানি ও দু’টি ফৌজদারি এজলাস-সহ প্রশাসনিক কক্ষ। ১৯২২ সালে তৈরি হওয়া এই হেরিটেজ ভবনটি ঢেলে সংস্কার হচ্ছে। বিচারকদের এজলাস লাগোয়া খাস কামরার আয়তন বাড়ানো হচ্ছে। ভবনটির লম্বা বারন্দার মেঝে জুড়ে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক ফ্লোর-টাইলস্‌। যদিও এ সবের ফলে হেরিটেজ ভবনটির গঠনে অনেকটাই পরিবর্তন হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

দীর্ঘ ৪৫ বছর কর্মসূত্রে আদালতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ ল-ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের ঝাড়গ্রাম কোর্ট ইউনিটের সম্পাদক ধীরাজ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এ ভাবে ভবনটির ঐতিহ্য ক্ষুন্ন হতে দেখে খুবই খারাপ লাগছে। ঐতিহ্য বজায় রেখে ভবনটি সংস্কার হলে ভাল হত।” ঝাড়গ্রাম আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী কৌশিক সিংহ বলেন, “আদালত ভবনের সংস্কার ও সম্প্রসারণ প্রয়োজন। তবে, সবচেয়ে পুরনো হেরিটেজ ভবনটি অতীত ইতিহাসের সাক্ষী। সেই ভবনের চেহারা বদলে দিয়ে সংস্কার করাটা অতীত ইতিহাসের পক্ষে মর্যাদা হানিকর।”

Advertisement

হেরিটেজ ভবনের সংস্কার-কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ আইনজীবী। ঝাড়গ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুমন সেন বলেন, “আগামী দিনের ঝাড়গ্রাম জেলার স্বার্থে আদালতের ভবন ও এজলাস গুলির যে ধরনের সংস্কার হচ্ছে, তাতে বিচার প্রার্থীরা উন্নততর পরিষেবা পাবেন। তবে, হেরিটেজ আদালত ভবনটির সংস্কারের বিষয়ে একাংশ আইনজীবী উষ্মাপ্রকাশ করছেন।” ঝাড়গ্রাম আদালতের নাজির শেখ শাহাজাদা অবশ্য হেরিটেজ নষ্টের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কাজ হচ্ছে। সংস্কারের কাজ শেষ হলে সেটা বোঝা যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন