গান গাইছিলেন, হঠাৎই মঞ্চ থেকে ছুটে পালালেন গুরু রনধাওয়া

‘ও তেরি পাগল মুন্ডে হ্যায়’....। হলদিয়া মেলার মঞ্চে মঙ্গলবার গান গাইছিলেন পঞ্জাবের র‌্যাপার গুরু রনধাওয়া। হঠাৎই সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মীর ঘাড়ে উড়ে এসে পড়ল একটি চেয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৭
Share:

গুরু রনধাওয়া

‘ও তেরি পাগল মুন্ডে হ্যায়’....। হলদিয়া মেলার মঞ্চে মঙ্গলবার গান গাইছিলেন পঞ্জাবের র‌্যাপার গুরু রনধাওয়া। হঠাৎই সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মীর ঘাড়ে উড়ে এসে পড়ল একটি চেয়ার। ঘুরে তিনি দেখেন, শুরু হয়েছে চেয়ার ছোড়াছুড়ি। বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে দর্শকেরা চলে আসছে সামনের সারিতে। আর তা দেখে মঞ্চ ছেড়ে শিল্পী ‘ছুটলেন’ সাজ ঘরে।

Advertisement

হলদিয়ার মেলার পঞ্চম দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, ভিআইপি আসন সংরক্ষণ নিয়ে বচসা বাধে দর্শকদের মধ্যে। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে যায় যে, ক্ষুব্ধ দর্শকেরা মেলায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেন বলে অভিযোগ। শেষে পুলিশ লাঠি চার্জ করতে ‘বাধ্য’ হয় বলে দাবি মেলায় আগত দর্শকদের।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মেলায় গুরু রনধাওয়ার অনুষ্ঠানের কথা ছিল। জনপ্রিয় ওই সঙ্গীত শিল্পীর অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় করেন। দর্শকদের একাংশের অভিযোগ, অনুষ্ঠানের যত সংখ্যক ভিআইপি পাস দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে আসনের সংখ্যা কম ছিল। কোলাঘাট থেকে আসা এক ভিআইপি পাসধারী দর্শক বলেন, ‘‘সন্ধ্যে থেকে মেলায় এসেছি। ভিআইপি পাস থাকলেও আসন জোটেনি।’’ নাম প্রকাশে আর অনিচ্ছুক এক দর্শক বলেন, ‘‘যত সংখ্যক পাস দেওয়া হয়েছিল, সেই মত বসার চেয়ার ছিল না। তাই আসন পেয়ে দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তা পরে বিশাল আকার নেয়। চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু হয়।’’

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে গোলমালের পর মঞ্চের চারপাশে ছড়িয়ে আছে ভাঙা চেয়ার। হলদিয়া মেলায়।—নিজস্ব চিত্র

পরে পৌনে ১০টা নাগাদ উত্তেজিত জনতা বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে ঠেলাঠেলি শুরু করে দেন। ভেঙে দেন কয়েকশো চেয়ার। অভিযোগ, দর্শকদের সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পাল্টা দর্শকেরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় সঞ্চালক তথা অভিনেতা রাজপাল যাদব।

মেলার আয়োজক সংস্থা হলদিয়া পুরসভার এক কাউন্সিলর দীপক পণ্ডা বলেন, ‘‘চারটি বিভাগে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ডি জোনে জেলার পদাধিকারী হিসেবে চারশো ব্যক্তির বসার জায়গা রয়েছে। ভিআইপি এবং ভিভিআইপি মিলিয়ে ১২ হাজার দর্শকের বসার ব্যবস্থা ছিল মেলায়। তারপর রয়েছে সাধারণ দর্শকদের বসার জায়গা।’’ কিন্তু তার পরেও মেলায় বসার জায়গা নিয়ে বিশৃঙ্খলা হল কী করে? মেলায় যথেষ্ট স্বেচ্ছাসেবক নেই বলেও অভিযোগ করেছেন দর্শকদের একাংশ।

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামল আদককে ফোন করা হয়েছিল। তবে তাঁর ফোন ছিল ‘নট রিচেবল’। হলদিয়ার পুর পারিষদ (পরিবহণ) আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘অনেক বেশি সংখ্যায় দর্শক চলে আসায় পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে গিয়েছিল। তবে তা সামাল দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন