সাজবে বিদ্যাসাগর হলের মুক্তমঞ্চ

কোথাও পলেস্তরা খসে পড়ছে। কোথাও দেওয়ালে ফাটল। পুরনো কোনও বসতভিটে নয়, মেদিনীপুরের মুক্তমঞ্চের এমনই দাঁত-নখ বেরনো দশা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

অনাদরে: জীর্ণ এই মুক্তমঞ্চেরই হাল ফিরবে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

কোথাও পলেস্তরা খসে পড়ছে। কোথাও দেওয়ালে ফাটল। পুরনো কোনও বসতভিটে নয়, মেদিনীপুরের মুক্তমঞ্চের এমনই দাঁত-নখ বেরনো দশা!

Advertisement

বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির (বিদ্যাসাগর হল) চত্বরের এই মুক্তমঞ্চ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত। এই স্মৃতি মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পরে বিদ্যাসাগর হল চত্বরে মুক্তমঞ্চ তৈরির তোড়জোড় হয়। তবে অর্থাভাবে কাজটা সম্পূর্ণ হয়নি যে আংশিক পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল, তাই এখন বেহাল। শহরবাসীর অভিযোগ, স্রেফ নজরদারির গাফিলতিতেই হতশ্রী হয়েছে এই মঞ্চ। মঞ্চটি বড় মাপের অনুষ্ঠানের উপযুক্ত নয়। নির্মাণ পরিকল্পনাতেও অভাব রয়েছে। অনুষ্ঠানের সময় শব্দ স্পষ্ট শোনা যায় না। গায়কেরা গান ধরলে প্রতিধ্বনির চোটে সব সুর তালগোল পাকিয়ে যায়। কান খাড়া করেও বোঝা যায় না নাটকের সংলাপ। মুক্তমঞ্চটি অবহেলা ভরে তৈরি হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।

পরিস্থিতিতে দেখে বিদ্যাসাগর হলের পরিচালন সমিতির আর্জিতে সাড়া দিয়ে মুক্তমঞ্চের পরিকাঠামো উন্নয়নে ৫ লক্ষ টাকা দিচ্ছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। মৃগেনবাবু বলেন, “সমিতি অর্থ সাহায্য চেয়েছিল। আমি বিধায়ক তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিচ্ছি। পরিকল্পনা মতো কাজ হলে মঞ্চটির হাল অনেকটাই ফিরবে।” মুক্তমঞ্চের উপর দিকে ছাউনি নেই। সমিতি ঠিক করেছে, আপাতত এই টাকায় টিনের ছাউনি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, আরও কিছু কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। মুক্তমঞ্চের কাজে অর্থ সাহায্য চেয়ে মেদিনীপুরের সাংসদ সন্ধ্যা রায়ের কাছেও আবেদন জানাবে সমিতি। মেদিনীপুর শহরে প্রায়ই নানা অনুষ্ঠান হয়। তবে শহরে চাহিদা অনুপাতে উন্নতমানের সভাঘর না থাকায় সমস্যায় পড়েন উদ্যোক্তারা। বড় মাপের অনুষ্ঠানের জন্য শহরে সভাঘর বলতে প্রদ্যোত স্মৃতি সদন (জেলা পরিষদ হল), স্পোর্টস কমপ্লেক্স আর এই বিদ্যাসাগর হল। রবীন্দ্র নিলয়, শ্যাম সঙ্ঘের মতো আরও কয়েকটি সভাঘর রয়েছে। তবে এখানে বড় মাপের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা অসম্ভব। তাই এই মুক্তমঞ্চের হাল ফেরানো খুব জরুরি।

Advertisement

শহরবাসীর দাবি, মুক্তমঞ্চের আশপাশের এলাকাও সংস্কার করে সৌন্দর্যায়ন করা জরুরি। বিদ্যাসাগর হলের দেখভালের জন্য পরিচালন সমিতি রয়েছে। পদাধিকার বলে সমিতির সভাপতি জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। সমিতির দাবি, হলের মানোন্নয়নে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। এ বার হল চত্বরের উদ্যান সাজিয়ে তুলবে পুরসভা। উদ্যানের সামনের দিকে নতুন গেট, চারপাশে নতুন করে রেলিং হবে। চারধারে নানা গাছ লাগানো হবে। উদ্যানে থাকবে ঝরনা, বাহারি আলো। নতুন করে বসার জায়গাহবে। হল পরিচালন সমিতির অন্যতম কর্তা সুকুমার পড়্যা বলেন, “বিদ্যাসাগর হলের সুন্দর পরিবেশ রক্ষা করতেই হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন