নালিশ দল ভাঙানোর, ‘বন্দি’ তিন তৃণমূল কর্মী

বিজেপির অভিযোগ, গ্রামে পৌঁছলেও নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। কারণ, তৃণমূলের তিন কর্মীকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও পুলিশ থানায় নিয়ে যায়নি বলে অভিযোগ বিজেপির। নছিপুরের কাছে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল এলাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০০:১৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বিজেপির জয়ী সদস্যকে ভাঙানোর অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাতভর নাটক কেশিয়াড়িতে।

Advertisement

বুধবার রাত তখন ৮টা। নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আমিলাসাই বুথের বিজেপির জয়ী সদস্য মমতা দণ্ডপাটের বা়ড়িতে পৌঁছন তিনজন। সুধীর মান্ডি, ত্রিলোচন সিংহ, বাদল দোলাই। স্থানীয় সূত্রের খবর, এরা তিনজনই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত। মমতাদেবী বাড়ি ছিলেন না। তিনি গিয়েছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়ি। মমতাদেবীর শ্বশুর প্রবোধ দণ্ডপাটের অভিযোগ, বৌমা যাতে শাসক দলে যোগ দেয় সে ব্যাপারে অনুরোধ করে ওই তিনজন। অভিযোগ, অনুরোধের সুর দ্রুত বদলে যায় হুমকিতে। টাকা, চাকরির প্রলোভন অস্বীকার করতেই অস্ত্র বার করে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রবোধবাবুর দাবি, এরপর তিনি চিৎকার করতেই ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। তিনজনকে আটকে রাখেন তাঁরা। পরে কেশিয়াড়ি থানায় খবর দেওয়া হয়। প্রবোধবাবু বলেন, ‘‘বাড়িতে ঢুকে ওই তিনজন বোর্ড গঠনে তৃণমূলকে সমর্থন জানানোর কথা বলে। বৌমা বাড়িতে ছিল না। অস্বীকার করলে নগদ অর্থ ও চাকরির প্রলোভন দেয়। এরপর অস্ত্র বার করে শুরু হয় হুমকি।’’ বিজেপির দাবি, চাপের মুখে পড়ে অভিযুক্ত সুধীর, ত্রিলোচন, বাদল স্বীকার করে নেন যে, তাঁরা ব্লক সভাপতি-সহ অঞ্চলের অন্য নেতৃত্বদের কথা মতো বিজেপি প্রার্থীকে ভাঙানোর জন্য এসেছিল।

বিজেপির অভিযোগ, গ্রামে পৌঁছলেও নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। কারণ, তৃণমূলের তিন কর্মীকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও পুলিশ থানায় নিয়ে যায়নি বলে অভিযোগ বিজেপির। নছিপুরের কাছে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল এলাকা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে বিজেপি এবং তৃণমূল একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, তাদের কর্মীরা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। সেসময় তাঁদের উপর আক্রমণ হয়। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী বাদল দোলাইও বলেছেন, ‘‘দলের মিটিংয়ের উদ্দেশে গ্রামে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে কয়েকজন বাইক সমেত পথ আটকায় এবং মারধর করে। কেড়ে নেওয়া হয় টাকা। বিজেপি ওই এলাকায় জেতার ফলে সন্ত্রাস চালাচ্ছে।’’ শত্রুঘ্ন বাগ, নবকুমার রাউৎ, ভগীরথ রাউৎ, অযোধ্যা ধাউড়িয়া, তাপস ধাউড়িয়ার নামে কেশিয়াড়ি থানায় অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল।

দল ভাঙানোর চেষ্টা করেছিলেন?

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পবিত্র শীট বলেন, ‘‘ মিথ্যে অভিযোগ। আমাদের কর্মীদের ফাঁসাতে চাইছে বিজেপি। আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। থানায় জানিয়েছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, আটকে থাকা তৃণমূল কর্মীদের উদ্ধার করে থানায় আনার সময় গাড়ির কাচ ভাঙা হয়েছে। দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন