স্বাস্থ্যকর্মীর বদলি রুখলেন গ্রামবাসী

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা লাগিয়ে, জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তিন স্বাস্থ্য কর্মীর বদলি রুখলেন গ্রামবাসী। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি ব্লকের চিচিড়া গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। চিচিড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিত্‌সক রয়েছেন দু’জন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরা পালা করে সকাল-দুপুর ঘন্টা দু’য়েক থাকেন। রাত-বিরেতে এলাকাবাসীর ভরসা বলতে প্রসবে অভিজ্ঞ তিন মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী (এনপিএম)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০০:০৩
Share:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা লাগিয়ে, জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তিন স্বাস্থ্য কর্মীর বদলি রুখলেন গ্রামবাসী। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি ব্লকের চিচিড়া গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা। চিচিড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিত্‌সক রয়েছেন দু’জন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরা পালা করে সকাল-দুপুর ঘন্টা দু’য়েক থাকেন। রাত-বিরেতে এলাকাবাসীর ভরসা বলতে প্রসবে অভিজ্ঞ তিন মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী (এনপিএম)। কিন্তু আচমকা ওই তিন জনকে অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি করার নির্দেশ জারি হয়। এই বদলির প্রতিবাদে এ দিন বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। কাজে যোগ দিতে আসা চিকিত্‌সক ও নার্সদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখানে বাসিন্দারা। এমনকী কিছুক্ষণের জন্য ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোড অবরোধও করা হয়।

Advertisement

দশ শয্যা বিশিষ্ট চিচিড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘন্টা প্রসবের ব্যবস্থা রয়েছে। দু’জন চিকিত্‌সক ও তিন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক জন ফার্মাসিস্ট, তিন জন নার্স, এক জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীও রয়েছেন। চিচিড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, “চিকিত্‌সকরা নিয়মিত আসেন না। রাতে থাকেনও না। রোগীদের তাই এখানে ভর্তি নেওয়া হয় না। এই পরিস্থিতিতে ওই তিন জন মহিলা এনপিএম কর্মী পালা করে ২৪ ঘন্টা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সামলান। তাঁরাই মহিলাদের প্রসব করান। ওই তিন কর্মীকে বদলি করা হলে এই সামান্য পরিষেবাটুকুও মিলবে না।”

সম্প্রতি তিন জন এমপিএম-কে গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের শাসড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি করে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শাসড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিত্‌সক না থাকায় চিকিত্‌সকের সমতুল প্রসবে পারদর্শী ওই তিন মহিলা এনপিএম কর্মীকে শাসড়ায় বদলি করার সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

এ দিন বদলির বিষয়টি জানতে পেরে চিচিড়ার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত প্রায় ঘন্টা তিনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। চিকিত্‌সক-কর্মীদেরও ঘেরাও করে রাখা হয়। বিক্ষোভ চলাকালীন কিছুক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশও গ্রামবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে। এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মা ও জামবনির আইসি অরুণকুমার বাগদি ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। আসেন জামবনির বিডিও দীপ ভাদুড়ি। জাতীয় সড়কে অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ। কিন্তু উপযুক্ত প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন এলাকাবাসী।

শেষ পর্যন্ত ঝাড়গ্রামের সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) মনোজ মুর্মু ও জামবনি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) শুভজিত্‌ নায়েক ঘটনাস্থলে এসে আশ্বাস দেওয়ার পরে বিক্ষোভ ওঠে। ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, “গ্রামবাসীর দাবি মেনে তিন এনপিএম স্বাস্থ্য কর্মীর বদলির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা চিচিড়াতেই বহাল থাকবেন। এলাকাবাসীরা যাতে উপযুক্ত পরিষেবা পান তা দেখার জন্য স্থানীয় রোগী কল্যাণ সমিতিকে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement