প্রস্তুতি তুঙ্গে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় শূন্য হয়েছিল সবং বিধানসভা কেন্দ্রটি। আজ, বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন। ভোটে সবংয়ের প্রতিটি বুথেই ‘ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেইল’ (ভিভিপ্যাট) যন্ত্র ব্যবহার হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই প্রথম সবংয়ে কোনও ভোটে ভিভিপ্যাট ব্যবহার হচ্ছে। ভিভিপ্যাট ব্যবহারকে স্বাগত জানালেও নির্বাচন কতটা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে তা নিয়ে অবশ্য সংশয়ে বিরোধীরা।
সবংয়ে মোট ২৮৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা ৩০৬টি। বুধবারই প্রতিটি বুথে ইভিএম ও ভিভিপ্যাট নিয়ে পৌঁছে যান ভোটকর্মীরা। সবংয়ের ১৩৮টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্র চত্বরে চারজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন। বাকি কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ। ‘ওয়েব কাস্টিং’ ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও বুথগুলিতে নজরদারি চালাবে কমিশন। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘এ বার ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট ব্যবহার হচ্ছে। ফলে ভোটার ভোট দেওয়ার পর ভিভিপ্যাট যন্ত্র দেখে নিশ্চিত হতে পারবেন, তাঁর ভোট ঠিক জায়গায় পড়েছে কিনা।”
প্রশাসন নির্বিঘ্নে ভোট করার আশ্বাস দিলেও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধীরা। ভোট লুঠ করতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহিরাগত ঢোকানোর অভিযোগে সরব বামেরা। একই অভিযোগ কংগ্রেস, বিজেপি ও এসইউসি-রও। সিপিএম প্রার্থী রিতা মণ্ডল জানার অভিযোগ, মানস ভুঁইয়ারা অভ্যাস অনুযায়ী অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছেন। ওঁরা রাতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাইকে ঘুরছে। বহিরাগতরাও ঢুকেছে। মানস ভুঁইয়াকে বিঁধে কংগ্রেস প্রার্থী চিরঞ্জীব ভৌমিকেরও কটাক্ষ, ‘‘মানস ভুঁইয়া এতদিন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য ছুটতেন। কিন্তু সেই লোকটিই এখন ময়না, ভগবানপুর ও পটাশপুর থেকে বহিরাগত ঢুকিয়ে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছেন।” বহিরাগত ঢোকার অভিযোগে বুধবার রাত ৯টা নাগাদ সবং থানার সামনে অবস্থানেও বসেন বিজেপি কর্মীরা।
বিরোধীদের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন মানসবাবু। তাঁর দাবি, বাইরে থেকে লোক আনতে যাবেন কেন! তাঁরা জিতছেন। একইসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির কর্মী নেই। বাইরে থেকে ভাড়া করে কর্মী আনতে হচ্ছে। সিপিএম নিজের ভোট ধরে রাখতে মরিয়া। আর জগাই-মাধাইয়ের পার্টি কংগ্রেসেরও বেহাল দশা। তৃণমূলকে হারাতে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি একসঙ্গে হাত মিলিয়েছে।”