চন্দ্রকোনার চিঠি

অল্প বৃষ্টিতেই জলে ভাসে শহরের ঘর-বাড়ি

Advertisement
শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪১
Share:

নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন

Advertisement

কথায় রয়েছে ‘বাহান্ন বাজার-তিপান্ন‌ গলি, তবে জানবি চন্দ্রকোনায় এলি।’ দীর্ঘদিনের পুরনো এই জনপদের যথেষ্ট নাম- ডাক থাকলেও এখনও যানজট নিত্যসঙ্গী। শহরে বহু গলি রয়েছে। আর ইদানীং বড় বড় রাস্তাতেও সরকারি জমি দখল করে দোকান গজিয়ে উঠছে। ফলে প্রতিদিন সকাল দশটার পর থেকেই শহরের প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলিপথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পুরসভা থেকে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি আরও বাড়ানো প্রয়োজন। পুরসভার উদ্যোগে পাইলট প্রজেক্ট তৈরি করে প্রয়োজন মতো বাইপাস তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান জরুরি। জবরদখলকারীদের জন্য পুরসভার উদ্যোগে ঘর তৈরি করে ব্যবসার সংস্থান করে দিলেও ভাল হয়। দিনে-দিনে রাতের চন্দ্রকোনা শহরে নিরাপত্তা কমছে। এই পরিস্থিতিতে রাশ টানতে অলি-গলিতে পথবাতি দিয়ে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা করা ও নিয়মিত নজরদারি চালানো প্রয়োজন। এর ফলে অপরােধর মাত্রা কমবে বলে মনে হয়।

রসময় মণ্ডল (বগেশ্বরপুর), শিক্ষক।

Advertisement

মন্দির সংস্কারে জোর

জরাজীর্ণ ছোট অস্থল মন্দির।

চন্দ্রকোনা একটি ঐতিহাসিক শহর। এখনে বহু পুরনো মন্দির রয়েছে। এক কথায় শহরকে মন্দিরময় শহর বললেও ভুল হবে না। কিন্তু মন্দিরগুলি সংস্কার না হওয়ায় এখন ওই সব পুরনো স্থাপত্যগুলি ধ্বংসের পথে। শতাধিক বছরের পুরনো এই পুরসভা যদি মন্দিরগুলি সংস্কার করে-তাহলে এই জনপদ পর্যটন মানচিত্রে ঢুকতে পারে। পুরসভার এই ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। এখানে আগে নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চা ও নাটক হত। এখনও তা আগের তুলনায় অনেকটাই কম। শহরে সংস্কৃতি চর্চার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নেই। পুরসভা এই বিষয়ে উদ্যোগী হলে শহরের ঐতিহ্য রক্ষা পাবে আমার আশা।

সুচিত্রা মালিক (জয়ন্তীপুর), কলেজ ছাত্রী

অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ছে শহর

আজও গড়ে ওঠেনি পাকা নিকাশি নালা।

অপরিকল্পিত ভাবে ঘর-বাড়ি তৈরি হচ্ছে শহরে। শহরের নতুন পল্লিগুলিতেই এটি বেশি হচ্ছে। বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে সব সময় সঠিক বিধি না মানার দরুন শহর ক্রমে ঘিঞ্জি হয়ে উঠছে। শহরের নিকাশিরও বেহাল দশা। একটু বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তায় জল জমে যায়। এমনকী বহু বাড়িতেও জল ঢুকে যায়। দীর্ঘদিনের পুরনো পুর এলাকায় ইদানীং বড় বড় নিকাশি নালা তৈরি হচ্ছে। তবে শহরের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এখনও বহু নিকাশি নালা কাঁচা রয়েছে। শহরে নেই কোনও ভ্যাটও। ফলে শহরের রাস্তায় যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। বর্ষাকালে জলের তোড়ে,এমনকী জোরে ঝড় হলেও ওই সব নোংরা বাড়িতে ও রাস্তায় উঠে আসে। ছড়ায় দুর্গন্ধও। নিকাশি নালাগুলিও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আবর্জনা তুলে নিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার রেওয়াজও সে ভাবে শহরে নেই। শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে নিয়মিত আর্বজনা পরিষ্কার জরুির। শতাধিক বছরের পুরনো এই পুরসভার বাসিন্দারা যাতে সঠিক পরিবেশে বাস করতে পারেন-তা নিশ্চিত করতে পুরসভার আরও উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

সমীর জানা (আমডাংরা), আইনজীবী

জুয়া-সাট্টার ঠেকে নজর দিক প্রশাসন

শিক্ষাক্ষেত্রে ক্রমে এগোচ্ছে চন্দ্রকোনা। একইসঙ্গে শহরে বাড়ছে জুয়া-সাট্টার দাপট। সব জেনেও নির্বিকার পুলিশ-প্রশাসন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে নেশার দ্রব্য। শুধু বড়রা নয়, স্কুল-কলেজের ছোট-ছোট ছেলেরাও নেশার কবলে পড়ছে। সন্ধ্যা নামলেই ফাঁকা এলাকায় চলে জুয়ার আসর। এটা বন্ধ হওয়া খুব জরুরি। পুরসভার এখানে প্রত্যক্ষ ভাবে কিছু করার না থাকলেও শহরের যুবক থেকে মানুষ যাতে বিপথে পরিচালিত না হন-তার জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করে এ সব বন্ধ করার বিষয়ে নজর দিলে ভাল হয়।

মানিক সামন্ত (গাছশীতলা), ব্যবসায়ী।

ছোটদের জন্য এলাকায় পার্ক প্রয়োজন

বন্ধ পড়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শিশু উদ্যান।

চন্দ্রকোনায় কোনও বিনোদনের জায়গা নেই। শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্কের বিশেষ প্রয়োজন। স্কুল থেকে ফিরে বিকেল বেলা শিশুদের একটু খেলাধুলো করা দরকার। এমনিতেই এখন পড়াশোনার চাপে খেলার অবকাশ কমছে। শহরে সে ভাবে বড় মাঠ না থাকায় অভিভাবকেরা বাধ্য হয়ে তাঁদের বাচ্চাদের দূরের মাঠে নিয়ে যান। সব সময় সেটা সম্ভবও হয় না। একটু বড়রা বিকেলে বাড়ির সামনে গল্প করেই সময় কাটায়। পুর এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকের এই প্রত্যাসা থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। চন্দ্রকোনা ছোট শহর নয়। শহরে পুরসভার নিজস্ব জায়গাগুলিতে স্থায়ী পার্ক তৈরি করার আর্জি জানাচ্ছি।

তনুশ্রী চক্রবর্তী (মল্লেশ্বরপুর), গৃহবধূ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন