বেলপাহাড়ির মাওবাদী করিডরে পর্যটন প্রসারে ভাবনা

মাওবাদীদের মোকাবিলায় জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের স্বনির্ভরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। এ বার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে মাওবাদীদের যাতায়াতের করিডোরে পর্যটক-কটেজ গড়ে তোলার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁকড়াঝোর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:১১
Share:

খাঁদারানি ঝিল এলাকায় পর্যটমন্ত্রী গৌতম দেব। রয়েছেন জেলাশাসক আয়েষা রানি। নিজস্ব চিত্র

মাওবাদীদের মোকাবিলায় জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের স্বনির্ভরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন। এ বার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে মাওবাদীদের যাতায়াতের করিডোরে পর্যটক-কটেজ গড়ে তোলার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।

Advertisement

সোমবার কাঁকড়াঝোরে জেলাশাসক আয়েষা রানি ও পুলিশ-প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। পরে বেলপাহাড়ির বিভিন্ন দর্শনীয় জায়গাগুলিও ঘুরে দেখলেন পর্যটনমন্ত্রী।

এ দিন প্রথমে কাঁকড়াঝোরে মাওবাদীদের ধ্বংস করে দেওয়া বন দফতরের বনানী অতিথিশালার জায়গাও পরিদর্শন করেন গৌতমবাবু।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কাঁকড়াঝোর সিআরপি ক্যাম্প চত্বরে পর্যটন সংক্রান্ত বৈঠকে গৌতমবাবু পুলিশ-প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে এলাকার পরিস্থিতির সামগ্রিক রিপোর্ট নেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে জানানো হয়, সীমান্ত লাগোয়া ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদীরা এলাকার গ্রামে গ্রামে গণমিলিশিয়া গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০০৯-১০ সালে গ্রামবাসীদের নিয়ে গণ মিলিশিয়া বাহিনী গড়ে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকাকে প্রশাসনহীন করে দিয়েছিল মাওবাদীরা।

সূত্রের খবর, পর্যটনমন্ত্রী কাঁকড়াঝোরে ১০-১২ টি টুরিস্ট কটেজ করার জন্য প্রশাসনকে প্রকল্প-প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়ে ওই সব পর্যটক আবাস চালানোর কথা বলেন গৌতমবাবু। তিনি জেলাশাসক ও এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) দীপক সরকারকে জানিয়ে দেন, ‘এলাকাবাসীর অবস্থা স্বচ্ছল হলে এবং এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়লে অশান্তি দানা বাধতে পারবে না।’ পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এইসব এলাকায় সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর আশ্বাস দেন গৌতমবাবু।

গত ৯ অগস্ট ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাওবাদীদের নিশানা করে অভিযোগ করেছিলেন, ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে। এ বার বেলপাহাড়ির মাওবাদী প্রভাবিত বাঁশপাহাড়ি, শিমূলপাল ও ভুলাভেদা গ্রাম পঞ্চায়েত তিনটি আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ দখল করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাওবাদীরা বেলপাহাড়িতে নতুন করে প্রভাব বাড়াতে চাইছে। গৌতমবাবু এ দিন আমলাশোল ও ময়ূরঝর্ণা গ্রাম, খাঁদারানি ঝিল, গাডরাসিনি পাহাড়ের কোলে প্রাকৃতিক ঝর্না ও একটি আশ্রম পরিদর্শন করেন।

বিকেলে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে সাংবাদিক বৈঠক করে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চান জঙ্গলমহল ভাল থাকুক। সেই কারণে পর্যটন প্রসারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রীকে জনাব। তাঁর কথামত কাজ হবে।’’ মাওবাদীদের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে গৌতমবাবুর জবাব, ‘‘স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন