Waqf Board

ওয়াকফের জমি বেদখল, নালিশ শুনল সংখ্যালঘু কমিশন

কালেক্টরেটের সভাকক্ষে প্রথমার্ধের বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা। তাঁরাই সংখ্যালঘুদের নানা সমস্যার কথা শুনিয়েছেন দলটিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৬
Share:

বৈঠকে সংখ্যালঘু কমিশনের দল। মঙ্গলবার দুপুরে, মেদিনীপুর কালেক্টরেটে। নিজস্ব চিত্র

পশ্চিম মেদিনীপুরে এল রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের একটি দল। দলে রয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতাজ সঙ্ঘমিত্রা। মঙ্গলবার দলটি মেদিনীপুরে একাধিক বৈঠক করেছে। শুরুতে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের নিয়ে, পরে প্রশাসন, পুলিশ কর্তা, জনপ্রতিনিধি প্রমুখকে নিয়ে। বৈঠকে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা তাঁদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন দলটির কাছে। জেলায় ওয়াকফ বোর্ডের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে, এমন নালিশও শুনেছে কমিশনের দলটি।

Advertisement

কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতাজ সঙ্ঘমিত্রা মানছেন, ‘‘যাঁরা এসেছিলেন (বৈঠকে), তাঁরা সবার হয়ে কথা বলেছেন। কিছু সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন। যেমন কবরস্থানের জমি, ওয়াকফের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে।’’ কী ভাবে? চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘কোথাও জমিতে বাড়ি উঠছে, কোথাও অসামাজিক কাজকর্ম হচ্ছে। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই এটা কমন সমস্যা।’’ কমিশনের দলটি জানিয়েছে, প্রতিটি সমস্যার সমাধানে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবে। নিজেরাও উদ্যোগী হবে। আজ, বুধবার পর্যন্ত দলটির জেলায় থাকার কথা। বুধবার জেলার এক বা একাধিক এলাকায় পরিদর্শনে যেতে পারে দলটি।

কালেক্টরেটের সভাকক্ষে প্রথমার্ধের বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা। তাঁরাই সংখ্যালঘুদের নানা সমস্যার কথা শুনিয়েছেন দলটিকে। দ্বিতীয়ার্ধে মূলত প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। সংখ্যালঘু উন্নয়নের বিভিন্ন কাজকর্মের পর্যালোচনা হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সংখ্যালঘু বিষয়ক) শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি ব্লকের মধ্যে ৪টি ব্লক সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বলে পরিচিত— কেশপুর, গড়বেতা- ১, গড়বেতা-৩ এবং মেদিনীপুর (সদর)। সূত্রের খবর, প্রথমার্ধের বৈঠকে যে সব সমস্যার কথা উঠে এসেছিল, দ্বিতীয়ার্ধের বৈঠকে জেলা পুলিশ, প্রশাসনের কর্তা প্রমুখের সঙ্গে ওই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে কমিশনের দলটি। সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছে। হস্টেল না থাকা, স্কলারশিপ না পাওয়া, কিছু ক্ষেত্রে এমন সমস্যার কথাও শুনেছে দলটি।

Advertisement

সংখ্যালঘু উন্নয়নে ‘মাল্টি সেক্টরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’- এর (এমএসডিপি) কাজ চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। এখনও জেলার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত নানা এলাকায় একাধিক সমস্যা রয়েছে। কোথাও পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। কোথাও রাস্তাঘাটের সমস্যা রয়েছে। কোথাও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ঠিকঠাক নেই বলেই অভিযোগ। কিছু ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের গতি শ্লথ বলেও নালিশ। কেন তাঁদের জেলা সফর, তা জানাতে গিয়ে মমতাজ বলেন, ‘‘আমরা স্টাডি ট্যুরে এসেছি। মানে, সব খতিয়ে দেখতে এসেছি।’’

জেলায় সংখ্যালঘু দফতরের কাজ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে দলটি। চেয়ারপার্সনের কথায়, ‘‘মোটের উপর কাজটা ভালই করছে।’’ তবে তিনি জুড়ছেন, ‘‘হস্টেলের দাবি রয়েছে। মেদিনীপুরে মেয়েদের হস্টেল রয়েছে। কিন্তু ছেলেদের নেই। স্কলারশিপ, শিক্ষাঋণনিয়েও কথা হয়েছে।’’

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে মেয়েদের হস্টেল পরিদর্শনেও যান কমিশনের চেয়ারপার্সন। ওই হস্টেলে ৫১ জন‌ আবাসিক রয়েছেন।‌ মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সুবিধা- অসুবিধার‌ খোঁজখবর নেন চেয়ারপার্সন।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে। জেলায় প্রকল্পগুলির কাজকর্ম কেমন চলছে, সেটা খতিয়ে দেখেছে কমিশনের দলটি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন