Scheme Bank

কাজে গতি আনতে জেলা পরিষদে ‘স্কিম ব্যাঙ্ক’

সম্প্রতি জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখের সঙ্গে দেখা করেছেন সভাধিপতি।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৪৬
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমক থেকেই শিক্ষাগ্রহণ।

Advertisement

পূর্ত থেকে জনস্বাস্থ্য, আগামী দিনে কোন ক্ষেত্রে, কোন প্রকল্পের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা দরকার, তার তালিকা তৈরি করতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। পোশাকি নাম ‘স্কিম ব্যাঙ্ক’। পঞ্চায়েত সমিতিগুলির কাছে প্রস্তাবিত প্রকল্পের নাম চাওয়া হবে। তারপর জেলা পরিষদ ওই তালিকা তৈরি করবে। অর্থ এলে তালিকা ধরে প্রকল্পরূপায়ণ হবে।

সম্প্রতি জেলা পরিষদে এক বৈঠকে ‘স্কিম ব্যাঙ্ক’ তৈরি নিয়ে কথা হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন জেলা সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি প্রমুখ। ছিলেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও। কোনও ক্ষেত্রে অর্থ এলে যাতে দ্রুত প্রকল্প ঠিক করে ফেলা যায়, সেই জন্যই এই পদক্ষেপ। সভাধিপতি মানছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আরও সবিস্তার আলোচনা হবে।আমরা চাইছি, কাজ দ্রুত হোক।’’ সহ-সভাধিপতিও বলেন, ‘‘আমরা ‘স্কিম ব্যাঙ্ক’ গড়ছি। প্রাথমিক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এটা হলে আর কাজে দেরি হবে না। অর্থ এলে পড়েও থাকবে না।’’ এখনও জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতিগুলি গঠন হয়নি। যে সব কাজ চলছে, সেগুলি সময়ের মধ্যে শেষ করতে তদারকি শুরু করে দিয়েছেন সভাধিপতি,সহ সভাধিপতি।

Advertisement

সম্প্রতি জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখের সঙ্গে দেখা করেছেন সভাধিপতি। গত বছর মেদিনীপুরে এসে জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি প্রকল্পের ‘সিভিল ওয়ার্ক’ শেষ হয়নি শুনে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘জেলা পরিষদ কেন কাজটা করেনি এতদিন? কেন ঝোলানো হল? বছরের পর বছর সময় নষ্ট করা, ইজ ইট নট দ্যা ক্রাইম?’’ পূর্বতন বোর্ডের বিরুদ্ধে বরাদ্দ অর্থের অসম বন্টনের অভিযোগও উঠেছিল। সম্প্রতি হওয়া বৈঠকে সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি প্রমুখ ঠিক করেছেন, কোনও প্রকল্পের অর্থ এলে তা সব ব্লককে সমানভাবে সমবন্টন করা হবে। ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যার নিরিখে অর্থ বন্টন হবে।

গত ১৪ অগস্ট জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি নির্বাচন হয়েছে। এরপর স্থায়ী সমিতিগুলি গঠন হওয়ার কথা। তারপর সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন। জেলা পরিষদে অর্থ-উন্নয়ন-পরিকল্পনা বাদে ৯টি স্থায়ী সমিতি রয়েছে। কবে সমিতি গঠন হবে, বুধবার পর্যন্ত তা ঠিক হয়নি। জেলার ২টি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন স্থগিত হয়েছে। দুই পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন স্থগিত হওয়ার ‘জটে’ই না কি জড়িয়েছে জেলা পরিষদের পরবর্তী সভা ডাকার বিষয়টি।

চলতি অর্থবর্ষে জেলা পরিষদের বাজেট কম নয়। ২০২২-’২৩ এ বাজেট ধরা হয়েছিল প্রায় ১৫২ কোটি টাকা। সেখানে ২০২৩-’২৪ এর বাজেট ধার্য হয়েছে প্রায় ২৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্থ-পরিকল্পনায় ৩২ কোটি ৩০ লক্ষ, জনস্বাস্থ্যে ৯০ কোটি ৮১ লক্ষ, পূর্তে ১০৫ কোটি ৩৭ লক্ষ। দায়িত্ব নেওয়ার পর জেলা পরিষদের কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতিরা। দেখা গিয়েছে, কিছু প্রকল্পের কাজ সময়ে সম্পূর্ণ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে যথাযথ তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সহ-সভাধিপতি অজিত বলেন, ‘‘অনেক সময়েই নতুন প্রকল্প খোঁজা সময় সাপেক্ষ হয়ে ওঠে। ‘স্কিম ব্যাঙ্কে’র সুবিধা এখানেই। এটি থাকলে, যাবতীয় তথ্য মাউসের এক ক্লিকেই মিলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন