অধ্যাপককে হুমকির নালিশ

অভিযুক্তকে ছাড়া হল কেন, প্রশ্ন বিরোধীদের

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই রাজধর্ম পালনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলাবাজির অভিযোগে কালক্ষেপ না করে গ্রেফতার করা হয়েছে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলরকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৬ ০১:২১
Share:

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই রাজধর্ম পালনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলাবাজির অভিযোগে কালক্ষেপ না করে গ্রেফতার করা হয়েছে বিধাননগরের তৃণমূল কাউন্সিলরকে। যদিও আইআইটি-র অধ্যাপককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পরও খড়্গপুর পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল, প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

Advertisement

গত রবিবার অপূর্ববাবু ফোনে খড়্গপুর আইআইটি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায়কে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। আইআইটি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার টাউন থানায় অপূর্ববাবুকে ডেকে পাঠানো হয়। যদিও ওই দিন রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যা নিয়ে শাসকদলকে বিঁধছে বিরোধীরা। সিপিএমের খড়্গপুর শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডলের অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী তোলাবাজ-সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে যতই বড়-বড় কথা বলুন বাস্তবে তার কিছু দেখছি না। পুলিশের ভূমিকাও নিরপেক্ষ নয়। তাই আইআইটি-র এক অধ্যাপককে হুমকির অভিযোগের পরেও অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী হওয়ায় পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।”

একইসুরে, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, “এখন বিনা অপরাধেও বিরোধীদের ওপর পুলিশি জুলুম চলছে। অথচ অপূর্ব ঘোষকে থানায় এনে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হল। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কেউ পার পাবে না। সব নাটক।”

Advertisement

এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির বক্তব্য “এ সব পুলিশি বিষয়। এই ঘটনা তোলাবাজির মতো গুরুতর অভিযোগ নয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, অপূর্ব আইআইটি-র অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ জানিয়েছিল। হয়তো সেই সুর চড়া ছিল। তাই অভিযোগের পরেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। এতেই প্রমাণিত মুখ্যমন্ত্রী যা বলেন, তা-ই করেন।” আর অভিযুক্ত অপূর্ব ঘোষ বলছেন, “বিরোধীরা অনেক কথাই বলতে পারেন। তবে আইআইটি-র ঠিকা কর্মীদের প্রতি চলা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। হুমকি দিইনি।”

সম্প্রতি আইআইটি-র পড়ুয়াদের থাকার বিভিন্ন হল (হস্টেল) থেকে ন’জন ঠিকাকর্মীকে অন্য হলে বদলি করা হয়েছে। বদলি হওয়া কর্মীদের মধ্যে ছ’জনই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সদস্য। বাকি তিন জন সে ভাবে কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বেছে বেছে আইএনটিটিইউসি কর্মীদেরই বদলি করা হয়েছে। অভিযোগ, সেই প্রসঙ্গে রবিবার আইআিটি-র ‘হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’র কো-অর্ডিনেটিং ওয়ার্ডেন অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় অপূর্ববাবুর। সেই সময় আইআইটি-র আইএনটিটিইউসি পরিচালিত কর্মী সংগঠনের সভাপতি অপূর্ববাবু ফোনে হুমকি দেন।

এ বিষয়ে বুধবার অধ্যাপক অরুণকুমার সামন্তরায় বলেন, “বিষয়টি রেজিষ্ট্রার দেখছেন। ওনার সঙ্গে কথা বলুন।” যদিও এ দিন বারবার ফোন করেও আইআইটি-র রেজিস্ট্রার প্রদীপ পাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

অপূর্ববাবুকে কেন ছেড়ে দেওয়া হল, সেই প্রসঙ্গে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “আইআইটি-র দায়ের করা অভিযোগের স্বপক্ষে আমাদের হাতে কোনও প্রমাণ নেই। তা ছাড়া, রুজু হওয়া ধারা জামিনযোগ্য। তাই ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন