মেঘের চোখ রাঙানিতে উদ্বেগে পুজো উদ্যোক্তারা

মুখ ভার পুজো উদ্যোক্তাদেরও। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হওয়ার বৃষ্টি হয়েছে। আর তাতেই কোথাও মণ্ডপের দেওয়ালে যত্ন করে বসানো টেরাকোটার কারুকাজ খসে গিয়েছে। আবার কোথাও খড়ের চালা ভিজে জবজবে। ভারী বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় মণ্ডপ তৈরির কাজ ব্যহত হয়েছে সর্বত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

কারুকাজ: কাচের চুরি দিয়ে শিল্পীর ঘরে তৈরি হচ্ছে দুর্গার মুকুট ও অন্য গয়না। তমলুকের ডিমারিতে। ছবি: পার্থপ্রতিমা দাস

ষষ্ঠীতে বোধন আর সপ্তমীতে পুজো শুরু— সেই ধারণা বদলে গিয়েছে কবেই। কলকাতার ধাঁচে পূর্ব মেদিনীপুরের পুজো কর্তারা এখন চতুর্থীতেই উদ্বোধন সারেন জাঁক জমকে। তাই হাতে সময় প্রায় নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে নেমেছে বৃষ্টি। রীতিমতো নিম্নচাপ বিরাজ করছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সংলগ্ন এলাকার উপর। তাই মহালয়া থেকেই আকাশের মুখ ভার।

Advertisement

মুখ ভার পুজো উদ্যোক্তাদেরও। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হওয়ার বৃষ্টি হয়েছে। আর তাতেই কোথাও মণ্ডপের দেওয়ালে যত্ন করে বসানো টেরাকোটার কারুকাজ খসে গিয়েছে। আবার কোথাও খড়ের চালা ভিজে জবজবে। ভারী বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় মণ্ডপ তৈরির কাজ ব্যহত হয়েছে সর্বত্র।

বুধবারও সকাল থেকেও আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা, বৃষ্টি হয়েছে ইতিউতি। তাই উদ্বেগ বেড়েছে বড় বাজেটের পুজো উদ্যোক্তাদের। হাতে মাত্র চারদিন সময়, এই অবস্থায় মণ্ডপ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা নিয়ে সংশয়ে বেশ কিছু পুজো কর্তারা। পাঁশকুড়া কেশাপাট সর্বজনীনের মণ্ডপ গড়া হচ্ছে টেরাকোটার কারুকাজে। বাঁকুড়া থেকে আনা পোড়ামাটির সামগ্রী বসানো হয়েছে মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরে। মঙ্গলবার তার অনেকটাই খসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপ মান্না।

Advertisement

একই ছবি পুরাতন বাজার চৌরঙ্গী মোড় সর্বজনীন দুর্গোৎসবেও। এ বছর এখানে ইতালীয় রাজপ্রাসাদের আদলে মণ্ডপসজ্জা করা হচ্ছে। থার্মোকলের কারুকাজ ও ফাইবারের পুতুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ। বুধবার সকালে দেখা গেল মণ্ডপের সামনে মাঠে জমে আছে জল, ভিজে গিয়েছে থার্মোকলের কারুকাজ, কোথাও তা খুলে পড়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘মহালয়ার সকাল থেকে বৃষ্টিতে কাজ এগোনোই যায়নি। তার উপর কিছু কাজের ক্ষতিও হয়ে গিয়েছে। পাম্প করে মাঠের জল বের করতে হয়েছে।’’

ভারী বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ায় মণ্ডপের ক্ষতি হয়েছে তমলুক শহর, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নোনাকুড়ি, মেচেদা বাজার ও কোলাঘাট, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর ব্লকের বিভিন্ন মণ্ডপে।

তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ের ওয়ান হার্টেড ক্লাবের মণ্ডপ সজানো হচ্ছে বাঁশের কারুকাজে। তমলুকের নোনাকুড়ি সাংস্কৃতিক সংস্থার মণ্ডপে গ্রামীণ চালচিত্রের আদলে। মাটির বাড়িতে খড়ের চালা, ভিতরে পটশিল্পের ছোঁয়া। বৃষ্টিতে খড়ের ছাউনি ভিজে গিয়েছে। পুজো কমিটির তরফে জয়দেব বর্মন বলেন, ‘‘উদ্বোধনের আগে কী ভাবে মণ্ডপ শুকোনো হবে, তাই নিয়েই ভাবনা।’’

পুজোর আগে জোরালো রোদ না উঠলে, মণ্ডপ শুকোনো মুশকিল, মানছেন বেশির ভাগ পুজো উদ্যোক্তাই। আগামী ক’দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে?

জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র বুধবার অবশ্য খানিকটা আশ্বাসই দিয়েছেন, ‘‘আগামী ২-৩ দিন জেলায় ঝিরঝিরে বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাষ রয়েছে। তবে জেলায় আপাতত ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার এখনও কোন সতর্কতা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন