মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতিতার ‘রেকর্ড’ রাখে না পুলিশ-প্রশাসন। ফলে, কমিশনের কাজে সমস্যা হয়। মেদিনীপুরে এসে এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে লীনাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘রেকর্ড না রাখলে আমরা কাজটা করব কী ভাবে?’’ পুলিশ-প্রশাসনের তরফে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়, এমন সমস্যা যাতে আর না হয় তা দেখা হবে। এই দিকে নজরও রাখা হবে।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এসেছিল রাজ্য মহিলা কমিশনের এক প্রতিনিধি দল। চার সদস্যের দলে ছিলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা। দুপুরে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক বৈঠক হয়। ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) প্রতিমা দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্কর সহ জেলা পুলিশ-প্রশাসনের পদস্থকর্তারা। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বৈঠকে শুরুতেই নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানায় কমিশনের দলটি। কাজ করতে গিয়ে তাদের কী ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়, তা জানানো হয়। সামনে আসে নির্যাতিতার ‘রেকর্ড’ না রাখার বিষয়টি।
মাস কয়েক আগে ডেবরায় এক যুবতী নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে সেই সময়ে ডেবরায় এসেছিল কমিশনের দল। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এ দিনের বৈঠকে কমিশনের তরফে জানানো হয়, শুরুতে নির্যাতিতার শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়নি। অথচ, এ ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। প্রশাসনের ওই সূত্রে খবর, বৈঠকে উষ্মাপ্রকাশ করে কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমরা যখন আসব বললাম, তখন এক অফিসার দু’দিন ধরে মনে হয় মেয়েটিকে খুঁজেই বেরিয়েছেন। কী নাম, কোথায় বাড়ি— রেকর্ড না থাকলে মেয়েটি ক্ষতিপূরণ পাবে কী করে?’’ এখানেই শেষ নয়। দেখা গিয়েছে, জেলা থেকে কিছু রিপোর্টও সময় মতো কমিশনে পৌঁছয় না।
জেলায় কী কী সমস্যা রয়েছে? বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা বলেন, ‘‘সমস্যামুক্ত তো কেউ নই। সমস্যা থাকেই। সমস্যা না থাকলে আমাদের কমিশন হত না। পুলিশ-প্রশাসনেরও প্রয়োজন হত না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে অন্য জেলার থেকে মেদিনীপুরে সমস্যা তুলনামূলক কম।’’ কিছু রিপোর্ট কি কমিশনে পৌঁছয়নি? লীনা বলেন, ‘‘গোটা দশেক রিপোর্ট বাকি রয়েছে। এ মাসের মধ্যেই দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।’’ ডেবরায় তো একটা ঘটনা ঘটেছিল? কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমরা এসেছিলাম। মেয়েটি ক্ষতিপূরণ পাবে। সেই ব্যবস্থা চলছে।’’ পুলিশের কাজে কি কমিশন সন্তুষ্ট? কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘থানাগুলোকে আরও সচেতন হতে হবে।’’