গ্রেফতার নিহতের স্বামী

জঙ্গলে মহিলার দেহ, পরিচয় জানাল পুলিশ

গত ১৩ ডিসেম্বর গড়বেতার ঘোড়ামারার জঙ্গলে এক অজ্ঞাতপরিচয় অর্ধদগ্ধ যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, ওই যুবতীর নাম কল্পনা বেরা (৩৪)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪২
Share:

গত ১৩ ডিসেম্বর গড়বেতার ঘোড়ামারার জঙ্গলে এক অজ্ঞাতপরিচয় অর্ধদগ্ধ যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ জানান, ওই যুবতীর নাম কল্পনা বেরা (৩৪)। গড়বেতা থানা এলাকার বলদঘাটা গ্রামেই তাঁর বাড়ি। ঘটনায় অভিযোগের তির মৃতার স্বামী স্বরূপ বেরার দিকে। পুলিশ সুপার ভারতীদেবী বলেন, “স্ত্রী অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারেন স্বরূপবাবু। জিজ্ঞাসাবাদে সে কথা স্বীকার করেছেন।”

Advertisement

কল্পনাদেবীর দেহ প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় প্রথমে শনাক্ত করা যায়নি। পরে মৃতদেহের পাশে পড়ে থাকা জুতো, কানের দুল ও হাতের লোহার রিং দেখে ওই দেহ মায়ের বলে শনাক্ত করেন নিহতের মেয়ে পূজা কুণ্ডু বেরা। পরে কল্পনাদেবীর মাকেও সেগুলি দেখানো হয়। তিনিও দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া অলঙ্কার ও জুতো মেয়ের বলে শনাক্ত করেন। এরপরই দেহটি কল্পনাদেবীর বলেই নিশ্চিত হয় পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, স্বরূপবাবু ও কল্পনাদেবী- দু’জনেই তামিলনাড়ুতে একটি সুতোকলে কাজ করতেন। সেখানেই এক ব্যক্তির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কল্পনাদেবী। যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি চলছিল। স্বরূপবাবু জোর করে স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে ফেরেন। গত ১৩ ডিসেম্বর স্ত্রীকে মোটরবাইকে করে ঘোড়ামারার জঙ্গলের দিকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মারধর করার পর স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন তেল গায়ে ঢেলে পুড়িয়ে দেন।

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, কল্পনাদেবীকে যখন পোড়ানো হয়েছিল তখনও তিনি বেঁচে ছিলেন।” স্ত্রীকে খুন করার পরেই অবশ্য স্বরূপবাবু ফের তামিলনাড়ুতে পালিয়ে যান। পুলিশ মৃতদেহ শনাক্ত করতে পেরেছে কিনা জানতে তিনি ফের গ্রামে আসেন। পুলিশের দাবি, তিনি বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারেন পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। তারপর ভয়ে হোক বা অনুতাপে বিষ খেয়ে নেন। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ তামিলনাড়ুতে ও বাড়িতে স্বরূপবাবুর খোঁজ না পেয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজখবর শুরু করে। তখনই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ওই নামে এক ব্যক্তি ভর্তি ছিলেন বলে জানা যায়। সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি ফিরতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, তিন পাতা জুড়ে স্ত্রীকে খুনের কাহিনীও লিখে রেখেছিলেন স্বরূপবাবু। সেটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন