তমলুক জেলা হাসপাতালে হাজিরার বায়োমেট্রিক যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র
ধুলোয় মোড়া, ছেঁড়া হাজিরা খাতাকে বাতিল করে তমলুক জেলা হাসপাতালে সম্প্রতি লাগানো হয়েছিল বায়োমেট্রিক যন্ত্র। বছরখানেকেও কাটল না— বদলে গিয়েছে চিত্রটা। অবহেলায় ধুলো জমছে বায়োমেন্ট্রিক যন্ত্রে। আর দিব্যি নিজের পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছে হাজিরা খাতা!
স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক, আধিকারিক, নার্স এবং সব স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালে আসা-যাওয়ার প্রমাণ রাখতে বছর তিনেক আগে তমলুক জেলা হাসপাতালেও বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হয়েছিল। হাসপাতালে যাওয়া এবং বেরিয়ে আসার সময় ওই যন্ত্রের নির্দিষ্টস্থানে হাতের আঙুলের টিপ দিতে হয়। এর মাধ্যমে ওই উপস্থিতি পৌঁছে যায় স্থাস্থ্য দফতরের নথিতে। অভিযোগ, চালু হওয়ার কয়েক মাস যেতে না যেতেই সেই যন্ত্র এড়িয়ে পুরনো হাজিরা খাতাতে ফিরে গিয়েছেন হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে শুধু হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য ওই পদ্ধতি চালু হয়েছিল। পরবর্তী ধাপে প্রায় এক বছর আগে হাসপাতালের সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের জন্যও ওই পদ্ধতি চালু হয়ে যায়। এ জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সংলগ্ন একটি ঘরে আর দু’টি যন্ত্রও বসানো হয়েছিল। কিন্তু এর পরেই সমস্যার সূত্রপাত।
চিকিৎসক, আধিকারিক বাদ দিয়ে হাসপাতালে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট সাড়ে ৩৫০ জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। অভিযোগ, বায়োমেট্রিক যন্ত্র বাধ্যতামূলক না হওয়ায় তাঁদের একাংশ হাজিরা খাতাতেই সই করছেন। দিনে দিনে অব্যবহারের ফলে ধুলো জমছে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে।
হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার পর একাংশ কর্মী এবং আধিকারিকদের কিছুটা অসুবিধা হলেও হাসপাতালের সামগ্রিক কর্মসংস্কৃতির উন্নতি হয়েছিল। তবে বর্তমানে একাংশ কর্মীরা ওই যন্ত্র ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে যাচ্ছেন।’’
ওই অভিযোগ মানতে নারাজ কর্মী সংগঠন ‘নন-গেজেটেড হেলথ এমপ্লিয়জ অ্যাসোসিয়েশনে’র জেলা সম্পাদক সত্যরঞ্জন সাহু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বরাবর হাসপাতালে বায়োমেট্রিক যন্ত্রের মাধ্যমে হাজিরার হিসাব রাখার দাবি করেছি। কিন্তু জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সমস্ত কর্মীদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করতে পারেনি।’’
বায়োমেট্রিক যন্ত্র এড়ানো প্রসঙ্গে জেলা হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস জানান, যন্ত্র খারাপ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মূলত চিকিৎসকদের জন্য ওই বায়োমেট্রিক যন্ত্র বসানো হয়েছে। তবে কিছু প্রযুক্তিগত কারণে আপাতত ওই যন্ত্র বন্ধ রয়েছে। হাজিরা খাতার মাধ্যমেই নিয়মিত উপস্থিতি নেওয়া হচ্ছে।’’