বিদায়ী পুরপ্রধান আত্মগোপন করে রয়েছেন। ফলে, এখনও বেতন পেলেন না পুরকর্মীরা। বুধবার পর্যন্ত খড়্গপুর পুরসভার স্থায়ী ও অস্থায়ী পদের কয়েকশো কর্মী বেতন পাননি।
পুরবোর্ড গঠনের আগে রেলশহরে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একাধিক কাউন্সিলরের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বিদায়ী পুরপ্রধান কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডে গত ৩০ মে থেকে পুরসভায় আসছেন না। মিথ্যে মামলায় জড়ানোর আশঙ্কাতেই তিনি আত্মগোপনে বাধ্য হয়েছেন বলে বিদায়ী পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর। আর এর জেরেই ভোগান্তিতে পরেছেন পুরকর্মীরায়
খড়্গপুর পুরসভায় এই মুহূর্তে ২৭০ জন স্থায়ী ও ৬৮ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। রোজ মজুরির ভিত্তিতে আরও ১২৯ জন কাজ করেন। ১৯১ জন অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীও প্রতি মাসে পেনশন পান। সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা এই বাবদ খরচ হয় পুরসভার। বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রতি মাসের পয়লা তারিখেই। মহকুমা ট্রেজারির মাধ্যমে টাকা বরাদ্দ হয়ে গেলে পুরপ্রধানকে সই করতে হয়। সেই নথি ব্যাঙ্কে গেলে স্থায়ী কর্মীদের বেতনের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পড়ে। আর বাকিদের বেতন পুরসভা থেকেই দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও পুরপ্রধানের সই জরুরি। পুরসভার কোষাধ্যক্ষ শুভাশিস রায় বলেন, “প্রতি মাসে নির্দিষ্ট দিনে পুরপ্রধান সই করে দেন। শনি ও রবিবার না হলে ১- ২ তারিখের মধ্যেই কর্মীরা বেতন পেয়ে যান। কিন্তু পুরপ্রধানের সই ছাড়া ব্যাঙ্ক টাকা দিতে পারবে না।”
পুরবিধি অনুযায়ী, নির্বাচন হয়ে গেলেও বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়ায় চলতি মাস পর্যন্ত পুরসভা পরিচালনার ভার রয়েছে বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডের হাতে। কিন্তু গত মাসের শেষ থেকে বুধবার পর্যন্ত তিিন অফিসে না আসায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পুরসভার কর্মী উদয় চক্রবর্তীর কথায়, “গত মাসেও ঠিক সময়ে বেতন পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বার দেরি হচ্ছে। শুনেছি পুরপ্রধান আসতে না পারায় এই সমস্যা হয়েছে। কিন্তু নিয়ম অনুয়ায়ী এখনও বেতন না পাওয়ায় কর্মীদের সকলেরই অসুবিধা স্বাভাবিক।”
জানা গিয়েছে, এর আগেও অনাস্থা ভোটাভুটির সময় পুরসভার কর্মীরা প্রায় ১০দিন পরে বেতন পেয়েছিলেন। পুরনো সেই অভিজ্ঞতা থেকে এখন এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দ্রুত বেতনের দাবি তুলেছেন কর্মীদের একাংশ। পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার (ইও) বাসুদেব পাল বলেন, “পুরপ্রধান না আসায় বেতনের কাগজে সই হয়নি। তাই বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। তবে আমরা সব কাজ শেষ করে ফেলেছি। শুধুমাত্র পুরপ্রধান সই করলেই সকলে বেতন পেয়ে যাবেন। আশা করছি খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।”
আজ, বৃহস্পতিবার পুরসভার নতুন পুরবোর্ড গঠনের পরে বেতন মেলে কি না সেই দিকেই তাকিয়ে পুরসভার কর্মচারীরা।