পাথরায় মন্দির রক্ষার আন্দোলন থেকে সরলেন সম্প্রীতির যোদ্ধা ইয়াসিন

মন্দিরময় পাথরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকায় হিন্দু মন্দির বাঁচিয়ে রাখতে এক মুসলমানের সংগ্রামের কথা ছ়ড়িয়ে রয়েছে পরতে পরতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৯
Share:

ইয়াসিন পাঠান। নিজস্ব চিত্র

পাথরার মন্দিরগুলো যেন আগলে রেখেছিলেন তিনি। এ কাজে কম লড়াই করতে হয়নি তাঁকে। তবু সরে আসেননি নিজের লক্ষ্য থেকে। পাথরাই যেন ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। সেই তিনিই, ইয়াসিন পাঠান, নিজেকে সরিয়ে নিলেন মন্দির- সংস্কারের আন্দোলন থেকে।

Advertisement

ফেসবুকে ইয়াসিনের ঘোষণা, ‘গভীর দু:খের সঙ্গে ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমার শারীরিক অসুস্থতা, বয়সজনিত ও পারিবারিক সমস্যার জন্য বিগত ৪৮ বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঐতিহাসিক স্থান মন্দিরময় পাথরা গ্রামে অবস্থিত ৩৪টি প্রাচীন স্থাপত্য রক্ষার যে আন্দোলন করছিলাম, সেই কর্মকাণ্ড থেকে অবসরগ্রহণ করলাম’। কেন এমন ঘোষণা করলেন? ইয়াসিন বলেন, ‘‘ফেসবুকে যা জানিয়েছি ওটাই কারণ। আর অন্য কোনও কারণ নেই।’’

মন্দিরময় পাথরা। মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকায় হিন্দু মন্দির বাঁচিয়ে রাখতে এক মুসলমানের সংগ্রামের কথা ছড়িয়ে রয়েছে পরতে পরতে। পাথরা মানেই যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যের পীঠস্থান। পাথরা মানেই ইয়াসিন পাঠান। তাঁর আন্দোলনের জেরেই ২০০৩ সালে ৩৪টি মন্দির অধিগ্রহণের পরে ১৯টি মন্দির সংস্কার হয়। চলতি বছরের গোড়ায় কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের (আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার) প্রতিনিধি দল পাথরা পরিদর্শনে আসে। এখানে জমি অধিগ্রহণের একটা সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয় দলটি। মন্দিরগুলো সংস্কার করে এলাকাকে সুন্দর করে সাজানোর আশ্বাসও দেয় ওই দল। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ইয়াসিন। তিনি না এগিয়ে এলে হয়তো কালের গর্ভে তলিয়ে যেত মন্দিরগুলো। টেরাকোটার শিল্পসমৃদ্ধ মন্দিরগুলো সংরক্ষণের আবেদন নিয়ে ২০০০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। এ বার পাথরায় পর্যটন- পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কেশিয়াড়ির মঞ্চ থেকে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক এই সময়ে অবসর ঘোষণা ইয়াসিনের। স্থানীয় বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, ‘‘উনি পাথরার সঙ্গেই থাকবেন।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন