গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
অন্য দিনের মতো সোমবারও বাড়ি থেকে বাসে চেপে কেশাপাটে গিয়েছিল টিউশনে। সেখান থেকে ফেরার পথে বিপত্তি। নবম শ্রেণির ওই স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীকে কটুক্তি করার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় উত্তেজিত জনতা গণপিটুনি দেয় তাকে। যদিও ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মেচগ্রামের বাঁশতলার ওই ছাত্রী সোমবার টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার জন্য কেশাপাট বাসস্ট্যান্ড থেকে পাঁশকুড়া স্টেশনগামী একটি বাসে উঠেছিল। বসার জায়গা না পাওয়ায় বাসে সে দাঁড়িয়েই ছিল। ওই কিশোরীর অভিযোগ, ওই সময় পাশে দাঁড়ানো এক যুবক তাকে প্রেম নিবেদন করে। সে বিরক্তি প্রকাশ করলেও ওই যুবক থামেনি। সে তাকে উত্ত্যক্ত করতেই থাকে। এর পরে ওই ছাত্রী নিজের বাড়ির কাছের বাস স্ট্যান্ডে নেমে যায়। তবে তাতেও দমেনি ওই যুবক। সে-ও বাস থেকে সেখানে নেমে কিশোরীর পিছু নেয় বলে অভিযোগ।
ওই বাস স্ট্যান্ডের কাছেই মেয়েটির বাড়ি। অভিযোগ, অভিযুক্ত যুবক তার পিছু ধাওয়া করে হাত ধরার চেষ্টা করে। তখন মেয়েটি চিৎকার করে। তা শুনে আশপাশের মানুষজন এবং পাশের ক্লাবের সদস্যরাও ছুটে আসেন। ধরা পড়ে যায় যুবক। শুরু হয় গণপ্রহার।
কিল, চড়, ঘুঁষি আর মারের চোটে ছিঁড়ে যায় জামা যুবকের জামা। ওই মেয়েটির মা-ও যুবকটির গালে কয়েক বাড়ি জুতোর ঘা মারেন। এর পরে হুঁশ ফেরে ওই যুবকের। হাতজোড় করে নিজের কৃতকর্মের ক্ষমা চায় সে। কিন্তু ততক্ষণে নাছোড়বান্দা ‘রোমিও’কে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার মানুষজন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই যুবক মত্ত অবস্থায় ছিল। তার জেরেই সে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে।
ঘটনাস্থলে ছিলেন এলাকার বাসিন্দা তন্ময় সিংহরায়। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটি মত্ত অবস্থায় মেয়েটির সাথে অভব্য আচরণ করছিল। মেয়েটির চিৎকারে আমরা সবাই ছুটে গিয়ে ওর হাত থেকে মেয়েটিকে রক্ষা করি।’’
পরে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা খবর দেয় যুবকটির বাড়িতে। সে পাঁশকুড়ার বাকুল্দা এলাকার বাসিন্দা। তার বাড়ির লোকজন এলে মেয়েটির পা ধরে ক্ষমা চেয়ে এলাকা ছাড়ে ওই যুবক। এলাকার বাসিন্দা মৃন্ময় পণ্ডা বলেন, ‘‘এলাকায় এ ধরনের ঘটনায় হতবাক। আমরা সকলে অন্যায়ের বিরুদেধে রুখে দাঁড়িয়েছি। এলাকার মানুষজন এভাবে রুখে দাঁড়ালে এ সব ঘটনা বন্ধ করা যাবে।’’
যদিও এ দিনের ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। তাই এ বিষয়ে তারা জানেন না।