এই জায়গাতেই চলে গুলি। নিজস্ব চিত্র।
চুরি, ছিনতাই থেকে বচসা— যে কোনও গোলমালে আগ্নেয়াস্ত্র যেন হাতের খেলনা হয়ে উঠছে রেলশহরে। চলছে গুলি, হচ্ছে খুন-জখম।
এ বার খড়্গপুর শহর ঘেঁষা জাতীয় সড়কের ধারে ধাবার বাইরে গুলি চলল। বুধবার মাঝরাতে সাহাচকের ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন এ ঈশ্বর রাও নামে বছর পঁয়ত্রিশের এক যুবক। তাঁর বাড়ি শহরের বালাজি মন্দির এলাকায়। ওই মন্দিরের সামনেই দশকর্মার দোকান রয়েছে ঈশ্বরের। বুধবার রাতে চার বন্ধুকে নিয়ে ধাবায় খাওয়াদাওয়া সেরে বেরনোর পরে পরিচিত এক যুবকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। তখনই ওই যুবকের সঙ্গী অন্য এক যুবক গুলি চালায় বলে অভিযোগ। বুকের ডান দিকে গুলি বেঁধে ঈশ্বরের। তাঁকে প্রথমে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বুধবার রাতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন তুফান দাস, দিবাকর রাও-সহ আরও তিন যুবক। ধাবা থেকে বেরনোর পরে ঈশ্বরের সঙ্গে খোকন পাত্র ওরফে তোতনকে কথা বলতে দেখা যায়। খোকনের বাড়ি খড়্গপুরের চুনাবস্তিতে। তবে একসময়ে তিনি বালাজি মন্দির এলাকাতেই থাকতেন। সেই সূত্রেই ঈশ্বরের পরিচয়। দিবাকর, তুফানরা বলছিলেন, “খোকন চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িত বলে জানতাম। অনেক দিন পরে দেখা হওয়ায় কথা হচ্ছিল। কিন্তু ওঁর সঙ্গে থাকা এক যুবক আমাদের গালিগালাজ করছিল। ঈশ্বর প্রতিবাদ করলে সে পিস্তল বের করে দু’বার ট্রিগার টেপে। দ্বিতীয় গুলিটা ঈশ্বরের বুকে বিঁধে যায়।”
সাম্প্রতিক কালে বারবার দুষ্কর্মের সাক্ষী থেকেছে খড়্গপুর। গত ২ অক্টোবর খোদ পুরপ্রধানের বাড়ির সামনে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে এক বৃদ্ধকে মারধর করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে তিন যুবক। তার আগে রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডুর গাড়ি লক্ষ করে গুলি চলে, গোলবাজারে বচসাতেও এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। ইদানীং শহরের দুষ্কৃতীরা গ্রামীণ এলাকার যুবকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাতীয় সড়কে ছিনতাই করছে। পুলিশ সূত্রে খবর, খোকনও এই কাজে যুক্ত। পুলিশের খাতাতেও তার নাম রয়েছে।
এই ঘটনায় ফের খড়্গপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। যে ধাবার সামনে ঘটনাটি ঘটে, তার এক কর্মী বলছিলেন, “আমাদের এখানে বেশিরভাগ লোকই খড়্গপুর শহর থেকে এসে। ধাবার সামনে গুলি চলায় আমরা আতঙ্কিত।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তের বক্তব্য, “একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আশা করছি দ্রুত অপরাধী ধরা পড়বে।’’