অরিন্দমকে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল চত্বরের মাটি দিচ্ছেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক হরিপদ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
কাল, শনিবার ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবস। এই দিনটিতে ক্ষুদিরামকে শ্রদ্ধা জানাতে মজফ্ফপুর যাচ্ছেন মেদিনীপুরের একদল যুবক। সঙ্গে নিচ্ছেন মেদিনীপুরের মাটি, ক্ষুদিরামের দিদি ও ভাগ্নে ললিতের ছবি, সিদ্ধেশ্বরীর চরণামৃত।
মেদিনীপুর থেকে ১৩ জন মজফফরপুর যাচ্ছেন প্রকাশ হালদার, অরিন্দম ভৌমিকরা। শনিবার ভোরে মজফফরপুর জেলে গিয়ে শহিদতর্পণ করবেন তাঁরা। যেখানে ক্ষুদিরাম বোমা ছুড়েছিলেন, যেখানে তাঁর দেহ দাহ করা হয়েছিল, সেই সব স্থানেও যাবে মেদিনীপুরের এই একদল যুবক। অরিন্দমের কথায়, “তিনটে ইচ্ছে পূরণ হয়নি। তাই এ সব সঙ্গে নেওয়া।” প্রকাশবাবু জানালেন, ক্ষুদিরামের স্মৃতি বিজড়িত মেদিনীপুরের চার জায়গা থেকে এই মাটি নিয়েছি।
বিভিন্ন নথিতে রয়েছে, ফাঁসির আগে ক্ষুদিরামের শেষ চারটি ইচ্ছে ছিল। প্রথমত, তিনি একবার তাঁর জন্মভূমি মেদিনীপুরকে দেখতে চেয়েছিলেন। দ্বিতীয়ত, দিদি ও ভাগ্নে ললিতের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। তৃতীয়ত, জানতে চেয়েছিলেন ভাগ্নি শিবরানির বিয়ে হয়েছে কি না। চতুর্থত, সিদ্ধেশ্বরী কালীমায়ের পাদোদক পান করতে চেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনটে ইচ্ছেই পূরণ হয়নি। ক্ষুদিরামকে শুধু জানানো হয়েছিল শিবরানির বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর। আর মৃত্যুদিন ১৯০৮ সালের ১১ অগস্ট। মাত্র ১৮ বছর ৮ মাস ৮ দিন বয়সেই ফাঁসির মঞ্চে গেয়েছেন জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন তিনি। দেশ তখন পরাধীন। ছাত্রাবস্থাতেই স্বদেশী আন্দোলনে প্রত্যক্ষ বাবে জড়িয়েছিলেন ক্ষুদিরাম। একদিন বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিপ্লবের গুরু সত্যেন্দ্রনাথ বসুর তাঁতশালায়। পরে অত্যাচারী ইংরেজ বিচারক কিংসফোর্ডকে খতম করার দায়িত্ব বর্তায় ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকির উপর। সেই ঘটনাতেই ফাঁসি হয় ক্ষুদিরামের।
অগ্নিযুগের সেই সৈনিককে শ্রদ্ধা জানাতেই মেদিনীপুরের মাটি নিয়ে মজফ্ফরপুর যাত্রা। অরিন্দম বলছিলেন, “ক্ষুদিরামের আত্মবলিদান দিবসে মজফ্ফপুর যেতে পারাটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।”