গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। শনিবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ঘাটালের এক তরুণীর। প্রায় প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। দাসপুরের কাশিয়াড়া গ্রামে প্রায় ২০ জনের জ্বর হয়েছে। তাঁদের অনেকেরই ডেঙ্গির লক্ষণ রয়েছে। খবর পেয়ে রবিবার সকালেই ওই গ্রামে যান স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডেঙ্গিতে ঘাটাল শহরে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে জ্বরের খবর আসছে। শিলারাজনগর গ্রামে এখনও অনেকে অসুস্থ হচ্ছে।’’ তবে তাঁর দাবি, প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। প্রচার হচ্ছে। সঙ্গে চলছে অসুস্থদের সময়মতো চিকিৎসাও।
দিন কয়েক আগে ঘাটাল শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের গড়প্রতাপনগরে চার জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ঘাটাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী মৌ শাসমলও (১৯) জ্বর নিয়ে বৃহস্পতিবার ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শুক্রবার তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম-এ রেফার করা হয়। শনিবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। দিন কয়েক আগে থেকেই জ্বরের প্রকোপ বাড়ছিল ঘাটাল ব্লকের অজবনগর-২ পঞ্চায়েতের শিলা রাজনগর গ্রামেও। প্রথমের দিকে প্রায় ৪৫ জনের মতো জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। হঠাৎই জ্বর আসছে, সঙ্গে তীব্র মাথার ব্যথা, অনেকের বমির উপসর্গও ছিল। তড়িঘড়ি মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। নতুন করে ফের ১৩ জনের মতো অসুস্থ হয়েছেন বলে খবর। একজনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এখনও যাঁরা অসুস্থ, তাঁদের ফের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। গ্রামে প্রচার চলছে।” ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষও স্বীকার করেছেন, “ঘাটাল শহরে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আমরাও প্রচার শুরু করেছি।”
কাশিয়াড়ায় জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন তমলুক জেলা হাসপাতাল ও একজন কোলাঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাতজন বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। বাকিদের চিকিৎসা চলছে গ্রামেই। রবিবার সকাল থেকেই কাশিয়াড়া গ্রামে জমা জল পরিষ্কার করেছে প্রশাসন। স্থানীয় ক্লাব যুবকদের সঙ্গে নিয়ে পুকুরগুলিতে ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। মাইকে প্রচার চলেছে। দুধকোমরা পঞ্চায়েতের সদস্য অষ্টম দোলই বলেন, “নতুন করে যাতে না কেউ অসুস্থ হয় সে দিকেও নজর রাখছি।’’