—প্রতীকী ছবি।
ব্যবসায়ীর বাড়িতে খাটে নীচে লুকিয়ে থাকায় চোর সন্দেহে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল গণপিটুনি। আহত অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানেও অন্য রোগীর জিনিসপত্র চুরির চেষ্টার অভিযোগ উঠল ওই যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি তমলুকের।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বল্লুক গ্রামের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী কাজ সেরে নিজের বাড়িতে ফেরেন। সে সময় ঘরের ভিতরে ঢুকে তিনি বিছানার নীচ থেকে কিছু শব্দ শুনতে পান। কোথা থেকে শব্দ আসছে, তার খোঁজ করতে গিয়ে ওই ব্যবসায়ী দেখেন, এক যুবক খাটের নীচে শুয়ে রয়েছে। ব্যবসায়ী তাকে ধরার আগেই ওই যুবক সেখান থেকে বেরিয়ে দৌড়ে পালায়। তবে ওই ব্যবসায়ীর চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে কয়েকশো মিটার দূরে বল্লুকহাটের কাছে ওই যুবককে ধরে ফেলে। এর পরে তাকে আটক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় ভিলেজ পুলিশের কাছে খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত যুবককে উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর তিরিশের ওই যুবকের নাম তাপস মাকড়। সে নন্দীগ্রামের আমগেছিয়া গ্রামের বাসিন্দা। বল্লুক-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শরৎ মেট্যা এ নিয়ে বলেন, ‘‘গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে পড়া এক যুবককে ধরে ফেলেছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। চোর সন্দেহে ওই যুবককে মারধর করেন উত্তেজিত গ্রামবাসী। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তদন্ত করছে।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাপসকে ভর্তি করানো হয়েছিল। রাতে হাসপাতাল কর্মীদের নজরে আসে যে, সাধারণ বিভাগে চিকিৎসাধীন থাকা তাপস নিজের শয্যা থেকে নেমে অন্য রোগীদের শয্যার চাদর তুলে তল্লাশি করছিল। হাসপাতাল কর্মীদের অনুমান, টাকা পয়সার খোঁজেই ওই যুবক এমনটা করছিল। পরে অবশ্য তাপসকে ফের নিজের শয্যায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তাপসের বিরুদ্ধে চুরির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তার বিরুদ্ধে এর আগে চুরির কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত তাপসের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাপসকে মারধরের ঘটনা নিয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চোর সন্দেহে তমলুকে গণপিটুনি কোনও নতুন ঘটনা নয়। গত কয়েক মাসে পুলিশ কর্মী-সহ বেশ কয়েকজন গণ প্রহারের শিকার হয়েছেন। মৃত্যুও হয় এক জনের।