হাতির আক্রমণে ফের মৃত্যু হল এক যুবকের। বদ্রীনাথ কিস্কু (৩৩) নামে ওই যুবকের বাড়ি চন্দ্রকোনা রোডের গোলধাইমা গ্রামে। শনিবার ভোরে বদ্রীনাথ তাঁর বাড়ির কাছেই একটি জঙ্গলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। আঁধারনয়ন বীটের অধীন পাটাইশোল বনাঞ্চলের দিকে যাওয়া হাতির পালের সামনে পড়ে যান তিনি। একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে। প্রথমে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে, পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা শুরুর আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা জানান, দ্রুত সম্ভব মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
মাস খানেক ধরেই দলমার প্রায় ১৪০টি হাতির পাল গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড, চন্দ্রকোনার বিভিন্ন বনাঞ্চলে ঘোরাফেরা করছে। সন্ধ্যা হলেই ঢুকছে লোকালয়ে। ক্ষতি করছে ফসলের। ক’দিন ধরেই নিয়ম করে গড়বেতার ধাদিকা, নরহরিপুর, খড়িকাশুলি, ভাটমারা-সহ ১০-১২টি গ্রামে ফসলের প্রচুর ক্ষতি করেছে তারা। এখনও ধাদিকার জঙ্গলে ৪০টি হাতি রয়েছে। সম্প্রতি ধাদিকা থেকে চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়া জঙ্গলে ঢুকেছিল ৭০টি হাতি।
বন দফতর সূত্রে খবর, গত সাত দিনে মেদিনীপুর ও রূপনারায়ণ বিভাগে প্রায় তিন-চারশো একর ফসলের ক্ষতি করেছে। শনিবার ভোরে হাতির পালটি দু’ভাগে ভাগ হয়ে স্থানীয় পাটাইশোল এবং আঁধারনয়ন জঙ্গলে ছিল। ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “ভোরে পাটাইশোল জঙ্গলের দিকে যাচ্ছিল হাতিগুলি। তখনই গোলকধাইমা গ্রামের ওই যুবক পালের সামনে পড়ে যান।”
অসুস্থ হস্তিশাবক উদ্ধার
অসুস্থ এক হস্তিশাবককে উদ্ধার করল বন দফতর। শনিবার গড়বেতার আমলাগোড়া রেঞ্জের গোলাঘাট গ্রামের বাসিন্দারা দেখেন, চাষজমিতে শুয়ে ছটফট করছিল শাবকটি। বনকর্মীরা এসে তাকে পাতারিশোল বিট অফিসে নিয়ে যান। রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আট মাসের হস্তিশাবকটির পেটে ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা হয়েছে। তবে অবস্থা স্থিতিশীল নয়। শিগগিরি তাকে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ আমলাগোড়া রেঞ্জার বাবলু মান্ডি জানান, শুক্রবার রাতে হাতির দল ধাদিকার জঙ্গল থেকে চাঁদাবিলার জঙ্গলে যাচ্ছিল। মাঝপথে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শাবকটিকে ছেড়ে চলে যায় তারা।’’ প্রাণী সম্পদ বিকাশ বিভাগের উপ-অধিকর্তা তুষারকান্তি সামন্ত বলেন, ‘‘তিন চিকিৎসকের দল শাবকটির চিকিৎসা করেছেন। পেটের ক্ষতে জল, কাদা লেগে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে।’’