Saumen Mahapatra

‘প্রবীণ’ সৌমেনকে কটাক্ষ যুব নেতার 

একশো দিনের কাজ প্রকল্প, আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পে এই রাজ্যের প্রাপ্য টাকার দাবিতে তৃণমূলের কিষান খেত মজুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৮
Share:

তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের কৃষক সমাবেশ কর্মসূচিতে ডাক না পেয়ে খোদ দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব দলের যুব নেতৃত্ব। সমাজমাধ্যমে সৌমেনকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি এবং তমলুক পুরসভার কাউন্সলির পার্থসারথি মাইতি। নাম না করে তমলুকের বিধায়ক তথা জেলা সভাপতিকে ‘অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র’র সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এতে তমলুক শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement

একশো দিনের কাজ প্রকল্প, আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পে এই রাজ্যের প্রাপ্য টাকার দাবিতে তৃণমূলের কিষান খেত মজুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে বৃহস্পতিবার মেচেদা ও তমলুক শহরে কৃষক সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছিল। মেচেদা থেকে র‍্যালি শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে তমলুক শহরে পৌঁছায়। শহরের হাসপাতাল মোড়ে সমাবেশও হয়। সেখানে কিষান ও খেত মজুর সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাত, দলের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র এবং শহরের বিভিন্ন নেতৃত্ব ছিলেন। ওই সমাবেশে তমলুকের পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান, একাংশ কাউন্সিলরকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পার্থসারথি মাইতি।

এ বিষয়ে পার্থসারথি সমাজ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাতেই সরব হয়েছেন। সৌমেন মহাপাত্রের একটি ছবি দিয়ে পার্থসারথি লিখেছেন, ‘‘আজ আছি কাল নেই। নোংরামি বন্ধ হোক। আমরা বিরোধী দলকে জেতাতে চাই না, হারাতে চাই।’’ এরপরেই সৌমেনের নাম না করেই পার্থসারথি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সভাপতি তুমি কার। তুমি তো জেলার সভাপতি। তুমি যে তমলুকের বিধায়ক। তোমার কাছে সবাই সমান। তুমি কি জানবে না, কেন নেই চেয়ারম্যান? কেন নেই ভাইস-চেয়ারম্যান। কেন নেই সব কাউন্সিলর?’’ পার্থসারথি লিখেছেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে চলুন। আপনার কাছে কর জোড়ে অনুরোধ, আপনি অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র হবেন না।’’

Advertisement

জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেই শাসক দলের যুব নেতার এমন মন্তব্যে জলঘোলা হচ্ছে দলের অন্দরে। রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, জেলা রাজনীতিতে তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ সৌমেন মহাপাত্র। পুজোর সময়ও মণ্ডপের উদ্বোধনের ব্যাপারে বিরোধীর দলনেতাকে সমানে সমানে টক্কর দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। প্রশ্ন উঠছে, দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের অন্দরে যুব সমাজকে গুরত্ব দেওয়ার যে চল সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, তাতে কি যুবদের কোপে পড়ছেন সৌমেনের মতো প্রবীণরা? পার্থসারথি অবশ্য বলছেন, ‘‘দলের শাখা সংগঠনের কর্মসূচি হলেও সেই কর্মসূচিতে শহরের মাত্র কয়েকজন নেতাকে ডাকা হয়েছিল। আর দলের জেলা সভাপতি গত পুরসভা ভোটের পর থেকে একটি গোষ্ঠীকে নিয়ে চলেছেন। এতে শহরের মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। জেলা সভাপতি দলের গোষ্ঠী কোন্দল মেটানোর চেষ্টা করেননি।’’

তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া অবশ্য তৃণমূল এই যুব নেতার বিরুদ্ধে জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা জানিয়েছেন। চঞ্চল বলেন, ‘‘ওই যুব নেতা যেভাবে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সমাজ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন তা দল বিরোধী কাজ। এই বিষয়ে দলের জেলা সভাপতি ও রাজ্য নেতৃত্বকে অভিযোগ জানানো হবে।’’ আর পার্থর মন্তব্য নিয়ে সৌমেন মহাপাত্র বলছেন, ‘‘দলের শাখা সংগঠনের কর্মসূচিতে কাকে ডাকা হবে, তা তাদের বিষয়। কিন্তু সমাজ মাধ্যমে ওই যুব নেতৃত্ব এমন মন্তব্য করা উচিত হয়নি। এ বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন