পোশাকে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন চণ্ডীপুরের এক প্রাথমিক শিক্ষিকা। শনিবার রাতে তমলুক জেলা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হল। বুধবার সকালে বছর বত্রিশের ওই মহিলা চণ্ডীপুরে নিজের বাড়িতে পোশাকে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ওই মহিলাকে উদ্ধার করে প্রথমে চণ্ডীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার জেলা হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও অভিযোগ হয়নি।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “যদি পুলিশের কাছে এবিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ জমা হয়। তবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মেয়েটির পরিবার সূত্রে খবর, গত বুধবার সকালে ওই মহিলার মা চণ্ডীপুর বাজারে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন মেয়েটির বাবা ও বোন। সেই সময়ই কেরোসিন গায়ে ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। পোড়া গন্ধ পেয়ে বোন ছুটে আসে। বোনের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে হাসপাতালে নিয়ে যান ওই মহিলাকে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মহিলা অভিযোগ করেন, “আমি শিক্ষকতা করতে চাইতাম না। আমাকে জোর করে স্কুলে পড়াতে যেতে বাধ্য করা হত। আমার উর্পাজনের টাকাও নিয়ে নেওয়া হত। বিয়ের জন্য বললে গায়ের রঙ কালো বলে খোঁটা দেওয়া হত। পুজোর সময় জামাইবাবু মারধর করে।” তবে মানসিক অত্যচারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে মেয়েটির পরিবার। মেয়েটির পরিবারের দাবি, ওই মহিলা বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। গত একবছরের বেশি সময় ধরে তাঁর চিকিৎসাও চলছে। মানসিক অবসাদের জেরেই সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ন’বছর ধরে তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের হেঁড়িয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাঁর বাবা রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিক, মা ভূপতিনগরের একটি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, তাঁর দিদি ও জামাইবাবুও স্কুল শিক্ষক। মেয়েটির মা বলেন, “বিয়ের জন্য মেয়ের দাবিমতো কাগজে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছিল। অনেকের সঙ্গে কথাও হয়। এর মধ্যে ছোট মেয়ের বিয়ে ঠিক হওয়ায় হয়তো ও কিছুটা ভেঙে পড়েছিল। তবে ওর বাবা-জামাইবাবু অত্যচার করেনি।”