এবিভিপি-র ছাত্রদের মার, অভিযুক্ত টিএমসিপি

এবিভিপি সমর্থক ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠল টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ডেবরার ক্ষুদিরাম মহাবিদ্যালয়ে। ওই কলেজে সদ্য শাখা খুলেছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। এ দিন সেই শাখার সদস্যরা যখন অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন, তখনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) সদস্যদের সঙ্গে বহিরাগত যুব তৃণমূল নেতারা মিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২৭
Share:

এবিভিপি সমর্থক ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠল টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ডেবরার ক্ষুদিরাম মহাবিদ্যালয়ে। ওই কলেজে সদ্য শাখা খুলেছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। এ দিন সেই শাখার সদস্যরা যখন অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন, তখনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) সদস্যদের সঙ্গে বহিরাগত যুব তৃণমূল নেতারা মিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। থানায় অভিযোগ জানাতে যাওয়ার সময়ও এবিভিপি-র ছাত্রদের ফের মারধর করা হয়। সনৎ পাল নামে জখম এক এবিভিপি সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। টিএমসিপি-র পাল্টা অভিযোগ, এবিভিপি-র বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে অশান্তি করছে।

Advertisement

ডেবরার এই কলেজের ছাত্র সংসদ রয়েছে টিএমসিপির দখলে। তবে বিজেপি হাওয়ায় সম্প্রতি এখানে শাখা খুলেছে এবিভিপি। আগামী ২৯ জানুয়ারি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এ দিন ডেবরা কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভোটার তালিকা নেওয়ার কথা ছিল এবিভিপি-র। সে কথা পুলিশকে আগে থেকে জানানোয় কলেজ গেটে পুলিশ মোতায়েনও ছিল। ডেবরা কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবিভিপির জেলা সম্পাদক সুব্রত নন্দীর নেতৃত্বে এবিভিপি সদস্যরা কলেজে যান। কলেজ গেটের কাছেই একপ্রস্থ গোলমাল বাধে। পরে সুব্রত নন্দীরা না ঢুকলেও এবিভিপি-র সদস্য কলেজ ছাত্ররা ভিতরে ঢুকলেই তাঁদের উপর টিএমসিপি-র ছেলেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

এবিভিপি-র সমর্থকরা কলেজের বাইরে চলে এলে ফের গোলমাল বাধে। এবিভিপি-র জেলা সম্পাদক সুব্রত নন্দী বলেন, “আমরা ঢুকিনি। অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে আমাদের কলেজ ছাত্রদের ভিতরে পাঠাই। তাঁদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা বাইরে এলে পুলিশের সামনে ফের আমাদের উপর হামলা হয়।” টিএমসিপি-র কলেজ ইউনিট সভাপতি আশুতোষ মাইতি এবং যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রদীপ করের নেতৃত্বে হামলা হয় বলে অভিযোগ। প্রদীপের পাল্টা দাবি, “এসএফআই থেকে সদ্য এবিভিপি হওয়া কিছু পড়ুয়ার সঙ্গে বহিরাগতরা কলেজে ঢুকতে গেলে ছাত্র সংসদ প্রতিনিধিরা বাধা দিয়েছে। তখন সামান্য বচসা ছাড়া কিছুই হয়নি। আমি পরে খবর পেয়ে গিয়েছিলাম। মারধরের অভিযোগ মিথ্যে।”

Advertisement

কলেজের অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা অবশ্য বলেন, “আমাকে এই বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। কলেজ নির্বাচনে যে কেউ মনোনয়ন দিতে পারে। তাতে আলাদা করে দেখা করার কোনও কারণ নেই।” যদিও সুব্রতর দাবি, “অধ্যক্ষকে আমরা ফোন করে ঘটনা জানিয়েছি। উনি ভোটার তালিকা দিতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।”

কলেজ নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, টিএমসিপি ততই তাদের সংগঠনের কর্মীদের উপর হামলা করছে বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন এবিভিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি স্বরূপ মাইতি। তাঁর মতে, “আসলে টিএমসিপি ভয় পাচ্ছে। তাই ওরা আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করছে।” এবিভিপির জেলা সভাপতির কথায়, “আগে বেলদা কলেজ, হিজলি কলেজে অশান্তি হয়েছিল। এ দিন ডেবরা কলেজেও অশান্তি হল। সব ক্ষেত্রেই টিএমসিপি গায়ের জোরে ছাত্র সংসদ দখল করতে চায়।” সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি।

এ দিনই পিংলা কলেজে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে দেখা করতে গেলে অধ্যক্ষ দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ তুলেছে ডিএসও। বিষয়টি তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহের পরিদর্শকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। ডিএসও-র অভিযোগ, এ দিন কলেজ নির্বাচনে যোগদানের প্রক্রিয়া জানতে তারা অধ্যক্ষের কাছে যায়। কিন্তু ৮ জানুয়ারির আগে না জানানোয় তারা নির্বাচনে যোগ দিতে পারতে না বলে জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ। ঘটনায় ক্ষুব্ধ ডিএসও-র জেলা সভাপতি দীপক পাত্র বলেন, “এই ঘটনা নজিরবিহীন। কলেজে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়নি। আমরা অধ্যক্ষের থেকে এ রকম পক্ষপাতিত্ব আশা করিনি।” কলেজের অধ্যক্ষ প্রতাপ মাইতির বক্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশমতো ৬ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কলেজ নির্বাচনে যোগদানকারীদের ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলেছিলাম। ডিএসও ওই সময়ের মধ্যে কিছু জানায়নি। তাই ওদের এই কথা বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন