এরপর বধূশ্রী-মাতাশ্রী, আশায় সন্ধ্যা

কন্যাশ্রী প্রকল্পের পরে আগামী দিনে বধূশ্রী এবং মাতাশ্রী প্রকল্পও চালু হতে পারে বলে মনে করছেন মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। বৃহস্পতিবার কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন সাংসদ। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্প তো হল। আমি দেখতে পাচ্ছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানেই থেমে থাকবেন না। বধূদের জন্য বধূশ্রী, মাতাদের জন্য মাতাশ্রী প্রকল্প হবে। এই দিনগুলোর জন্য আমরা অপেক্ষা করবো!”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৮
Share:

ছাত্রীদের আঁকা পোস্টারের প্রদর্শনী।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের পরে আগামী দিনে বধূশ্রী এবং মাতাশ্রী প্রকল্পও চালু হতে পারে বলে মনে করছেন মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন সাংসদ। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “কন্যাশ্রী প্রকল্প তো হল। আমি দেখতে পাচ্ছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানেই থেমে থাকবেন না। বধূদের জন্য বধূশ্রী, মাতাদের জন্য মাতাশ্রী প্রকল্প হবে। এই দিনগুলোর জন্য আমরা অপেক্ষা করবো!” কেন্দ্রের মোদী সরকার এ রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্পের অনুকরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সন্ধ্যাদেবীর কথায়, “অনেকে এখন নকল করছেন। কেন্দ্রে বিজেপি বলছে, বেটি পড়াও। এই কথার মধ্যেই আমরা বুঝতে পারছি, বাংলার উন্নয়ন কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে!”

এ দিনের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাম না করে তৃণমূলের আর এক সাংসদ তাপস পালের কু-কথার সমালোচনাও করেছেন সন্ধ্যাদেবী। মেদিনীপুরের সাংসদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনি মেয়েদের সম্মানের কথা বললেও আপনার দলেরই সাংসদ-নেতা তো মেয়েদের নিয়ে অসম্মানকর কথা বলছেন? জবাবে সন্ধ্যাদেবী বলেন, “আমি শুনিনি খারাপ কথা বলেছেন। এ রকম হওয়ার কথা নয়। উচিতও নয়। আমার মনে হয় না এই সব কথা মানুষ সহ্য করবে। আর মানুষ যদি সহ্য না করে তাহলে সেই কথার কোনও মূল্য থাকবে না। আমিও এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।”

Advertisement

রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরেও কন্যাশ্রী দিবস পালন করা হয়। এই উপলক্ষে আয়োজন করা হয় মেলার। জেলাস্তরের অনুষ্ঠানটি হয় মেদিনীপুর শহরের নির্মল হৃদয় আশ্রমের মাঠে। সাংসদ সন্ধ্যাদেবী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, দুই বিধায়ক মৃগেন মাইতি এবং শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। ছিলেন রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন উন্নয়ন নিগমের সভাপতি দীনেন রায়, জেলা পরিকল্পনা কমিটির সহ-সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ প্রমুখ। কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতাধীন ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল আগে। এ দিন তার পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সন্ধ্যাদেবী বলেন, “আজ আর নারী পিছিয়ে নেই। নারী এখন নিজের পরিচয়ে সব জায়গায় স্বীকৃতি পাবে। আজ গর্বের সঙ্গে বলতে ইচ্ছে করে আমি নারী। আমাদের আরও এগোতে হবে।” তাঁর আহ্বান, “এক সময়ে মেয়েদের অবহেলা করা হয়েছে। ভ্রুণহত্যা করা হয়েছে। তা যেন আর না-করা হয়।” এ দিনের অনুষ্ঠানে মেয়েদের স্বনির্ভর হওয়ার পরামর্শ দেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। উপস্থিত ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা কেউ ১৮ বছর হওয়ার আগে বিয়ে করবে না। জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে আমাকে বলবে। আমি বিয়ে আটকে দেবো। তোমরা পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হও।”


মেদিনীপুরে অনুষ্ঠানে সাংসদ সন্ধ্যা রায়।

দিনটি ‘ঐতিহাসিক’ বলে দাবি করেন রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন উন্নয়ন নিগমের সভাপতি দীনেন রায়। তাঁর কথায়, “আজ বাংলার ঐতিহাসিক দিন! এই প্রকল্প হতে পারে, আমরা আগে ভাবতেও পারতাম না!” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস্ অথরিটির সম্পাদক সুজিতকুমার ঝাঁ, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় প্রমুখ। জেলার সব ব্লকেও কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠান হয়। ছিল আলোচনা সভা ও বিতর্কের আয়োজনও।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় নাম ছিল ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব), ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেনদের। উপস্থিত ছাত্রীদের অনেকেই মনে করেছিল, তারা দেবকে এ দিন চোখের দেখা দেখবে। কনভয় নিয়ে মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা যখন মঞ্চের সামনে এসে পৌঁছন, তখন অনেকে ছুটে যায়। ভেবেছিল, দেব এসেছে। ছাত্রীদের ছুটে আসতে দেখে মন্ত্রীও অবাক হন। পরে অবশ্য উৎসাহী ছাত্রীদের ভুল ভাঙে!

ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন