বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশের কড়া পাহারা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
কারখানা তৈরির কাজ শেষ করে পরিজনদের দ্রুত চাকরির দাবিতে ফের বিক্ষোভ দেখালেন জমিদাতা পরিবারের একাংশ। সোমবার জিন্দল কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবিও জানান তাঁরা। বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে বাড়তি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল এলাকায়। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নির্দেশে শালবনিতে গিয়েছিলেন ডেপুটি পুলিশ সুপার (অপারেশন) সৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিল্প স্থাপনের জন্যই জিন্দলদের পশ্চিম মেদিনীপুরে এনেছিল রাজ্য সরকার। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে শিলান্যাসও করা হয় প্রকল্পের। শিলান্যাস অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে কলাইচণ্ডী খালের কাছে মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ করে মাওবাদীরা। দুর্ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ কর্মী জখম হলেও ক্ষতি হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর। সেই ঘটনার পর কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ফের সেই কাজ দ্রুত গতিতে শুরুর জন্য উদ্যোগ নেন জিন্দলরা। কাজ শুরুও হয়। গোড়ায় জিন্দল গোষ্ঠীর ঘোষণা ছিল, ২০১৩ সালের মধ্যেই প্রথম পর্যায়ের উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। অবশ্য এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
সপ্তাহ খানেক আগে জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন জমিদাতা পরিবারের একাংশ সদস্য। ওই দিনই তাঁরা জানিয়েছিলেন, ১৬ জুন ফের বিক্ষোভ কর্মসূচি হবে। সেই মতোই সোমবারের এই কর্মসূচি। গত সপ্তাহে বিক্ষোভ কর্মসূচির পর জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত। পরে তিনি জেলাশাসককে একটি রিপোর্টও দেন। গত সপ্তাহের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন প্রায় ২৫০ জন। সোমবারও প্রায় এই সংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হন। সূত্রের খবর, প্রকল্প এগোতে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাঁচামাল এবং জল। কাঁচামাল ভিন্ রাজ্য থেকে আনতে হবে। এই নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের জন্য প্রচুর জল প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে রূপনারায়ণ নদ থেকে জল আনার ব্যবস্থা করতে হবে। বিক্ষোভকারীদের একাংশের বক্তব্য, হয় দ্রুত কারখানা গড়তে হবে। নয়তো কারখানার জন্য যে জমি নেওয়া হয়েছে, তা ফিরিয়ে দিতে হবে। আগাম এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মোতায়েন ছিল পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী।
জমিদাতা পরিবারের সদস্যদের পক্ষে পরিস্কার মাহাতো বলেন, “আমরা চাই, দ্রুত কারখানা চালু হোক। কারখানার জন্য যাঁরা জমি দিয়েছেন, তাঁদের কাজ দেওয়া হোক।”