মৃত্যু হল গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম কেশপুরের এক তৃণমূল কর্মীর। শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মারা গিয়েছেন শেখ লখু (৫৫) নামে ওই ব্যক্তি। শুক্রবার সকালে কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানা এলাকার টাঙ্গাগেড়্যায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। লখু-সহ জখম হন তিন জন। লখুর মাথায় লাঠির ঘায়ে চোট লেগেছিল। আর আব্দুল রশিদ এবং মুস্তাকিন আলি জখম হয়েছিলেন বোমা ফেটে। লখুকে গোড়ায় কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেএমে। শুক্রবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রশিদ এবং মুস্তাকিনের চিকিৎসা চলছে কটকের এক হাসপাতালে।
এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ধৃতেরা হলেন সিরাজুল খান, আবুল হোসেন, মহসীন আলি এবং সামসেদ আলি। এঁরা সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। শনিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হলে ধৃতদের চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক। পুলিশ জানিয়েছে, গোলমালে জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই ঘটনাটিকে দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, সিপিএমের লোকজনই হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু মৃত-জখমের পাশাপাশি তো ধৃতরাও তো তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত? এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের বক্তব্য, “কেউই দলের নেতা-কর্মী নন, সমর্থক হতে পারেন!”
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর এক সময় সিপিএমের ‘লালদুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরপরই পরিস্থিতি বদলে যায়। তবে কেশপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। কোন্দল রয়েছে একেবারে বুথস্তর পর্যন্ত। যদিও তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব কখনওই এই কোন্দলের কথা মানতে রাজি হন না। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎবাবুর কথায়, “এ সব কুৎসা- অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়।” স্থানীয় ও দলেরই এক সূত্রে খবর, টাঙ্গাগেড়্যাতেও তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। মাঝেমধ্যেই তাদের বাদানুবাদ বাধে। একদিকে রয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এনামুল হক এবং তাঁর অনুগামীরা। অন্য দিকে, রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা গফফ্র খাঁ এবং তাঁর অনুগামীরা। গফফ্র আবার দলের অন্দরে চিত্ত গড়াইয়ের অনুগামী বলে পরিচিত। এনামুল সঞ্জয় পানের অনুগামী। চিত্তবাবু তৃণমূলের প্রাক্তন কেশপুর ব্লক সভাপতি। এনামুল এবং গফফ্র গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখল ঘিরে বিরোধের জেরেই শুক্রবার টাঙ্গাগেড়্যায় সংঘর্ষ বাধে বলে খবর।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু। ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল সাইকেল আরোহী এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ সাঁইথিয়া-মহম্মদবাজার রাস্তায়, পুনুর গ্রামের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত বালকের নাম মিহির বেশরা (১২)। তার বাড়ি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বনগ্রামে। ঘটনার পরে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর প্রতিবাদে এবং চালককে গ্রেফতারের দাবিতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ঘণ্টাখানেক পথ অবরোধ করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেই পুনুর থেকে বনগ্রাম সামান্য দূরে। মৃতের দাদা শিবনাথ হাঁসদা বলেন, “দিন পনেরো হল মিহিরের বাবা মারা গিয়েছেন। এ দিন সকালেমিহির সাইকেলে করে পুনুর গ্রামে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে এমন দুর্ঘটনা।” পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক ও চালকের খোঁজ চলছে।