তমলুক হাসপাতালে জখম সুশীল পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।
ফের তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ঘিরে অশান্ত খেজুরির উত্তর মালদা গ্রাম। বুধবার সকালে খেজুরি ২ ব্লকের বারাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর মালদা গ্রামে তৃণমূলের এক পক্ষ অন্য পক্ষের উপরে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের সংঘর্ষে খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ দাস-সহ দু’পক্ষের তিন জন আহত হন। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তারপর ফের বৃহস্পতিবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাসের গোষ্ঠীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত সুশীল পাত্র নামে এক তৃণমূল কর্মীকে রামকৃষ্ণ দাসের গোষ্ঠীর লোকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মারধরে আহত সুশীল পাত্রকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দিকে, আহত রামকৃষ্ণ দাসের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বৃহস্পতিবার কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আহত অপর এক তৃণমূল কর্মী শেখ রফিকও তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যদিও খেজুরি থানার পুলিশ এই ধরনের কোনও ঘটনা জানা নেই বলে দাবি করেছে। খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অসীম মণ্ডল জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরের পর থেকে উত্তর মালদা গ্রামে কোনও রকম অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। অসীমবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “বুধবার রামকৃষ্ণ দাসকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া ও তাঁকে মারধরের কথা জানতে পেরে তৃণমূল কর্মীরা রামকৃষ্ণবাবুকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের উপরই আক্রমণ করা হয়। ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।” স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “উত্তর মালদা গ্রামের শেখ হাসান নামে এক তৃণমূল কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের ঘটনায় রামকৃষ্ণবাবুর মদত ছিল, এমন ধারণার বশবর্তী হয়ে বুধবার রামকৃষ্ণবাবুকে তুলে নিয়ে গিয়ে যাঁরা মারধর করেছে, তাঁরা যে গোষ্ঠীরই লোক হোক না কেন, ঠিক কাজ করেননি।”
বুধবার রাতেই উত্তর মালদা গ্রামের রামকৃষ্ণবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত শুভ্রাংশু দাস-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রামকৃষ্ণ দাসকে অপহরণ ও মারধর করার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও উত্তর মালদা গ্রামে পরিস্থিতি থমথমে ছিল। আতঙ্কে বেশ কয়েকজন গ্রামছাড়া বলেও অভিযোগ। কাঁথির এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসু জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র্যাফ নামানো হয়েছে। গ্রামে পুলিশ পিকেটও রয়েছে।