আঞ্চলিক দল নয়, রাজ্যে ও কেন্দ্রে কংগ্রেস বা বিজেপির মতো কেন্দ্রীয় দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এই সমীকরণে দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়তে কংগ্রেসের বদলে বিজেপির পদ্মফুলে ছাপ দিয়ে নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরার বার্তা দেওয়া হল দলীয় কর্মিসভায়। মঙ্গলবার খড়্গপুরে এই কর্মিসভার পরে ৫ কিলোমিটার পদযাত্রাও হয়। কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রভাকর তিওয়ারি, দলের জেলা সহ-সভাপতি অজিত ভট্টাচার্য, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝাঁ, ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য প্রদীপ পট্টনায়েক প্রমুখ। রেলশহরে এ দিন ওই কর্মিসভায় যোগ দিয়েছিলেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তের বিজেপি কর্মী, ২০৫টি বুথের যুব কর্মী ও মহিলাকর্মীরা।
খড়্গপুর মিশ্র ভাষাভাষি মানুষের শহর। ফলে, বিজেপির প্রভাব রয়েছে। সম্প্রতি বিজেপি শহরের ২৬৫টি বুথে যুব সদস্য বাড়াতে জোর দিয়েছিল। এ দিনের কর্মিসভায় তার মধ্যে ২০৫টি বুথের যুব কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ দিন তাঁদের সামনে বেকারি, দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির মতো কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করা হয়। এ ছাড়া তৃণমূল আমলে উন্নয়নের তুলনায় বিভিন্ন এলাকায় ধর্ষণ, সারদা কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা বেশি পরিমাণে ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। সভায় আসা কর্মীদেরও এই সব খতিয়ান তুলে ধরে বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলিকে ভোট দিলে কেন্দ্রের সঙ্গে সমঝোতার অভাবে উন্নয়ন থমকে যায় বলেও দাবি করেন বিজেপির নেতারা। তাই লোকসভার মতো নির্বাচনে কেন্দ্রে একক ভাবে ক্ষমতায় আসতে পারে এমন দলকে ভোট দেওয়া উচিত বলে তাঁদের অভিমত। আর এ ক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গেই নাম আসে কংগ্রেসের। তবে কংগ্রেস পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে যে দুর্নীতি হয়েছে, তার অবসান ঘটাতে মোদী ঝড়ে সামিল হয়ে বিজেপির প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন করা হয়।
এ দিনের কর্মিসভায় প্রার্থী প্রভাকর তিওয়ারি তাঁর সব প্রতিপক্ষকেই আক্রমণ করেছেন। প্রভাকরবাবু বলেন, “সারদা কেলেঙ্কারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি ফুটে উঠেছে। তাঁর প্রার্থী প্রচারে বেরোতে পারছেন না। তা নিয়ে দলের কর্মীরাই অসন্তুষ্ট। আর সিপিআইয়ের তিন বারের জয়ী প্রার্থী আগের দফায় বরাদ্দ অর্থই খরচ করতে পারেনি। কংগ্রেস ভ্রষ্টাচারী দলে পরিণত হয়েছে। তাই উন্নয়নের স্বার্থে বিকল্প হিসেবে বিজেপিকেই বেছে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরতে হবে।” কর্মিসভার পরে পদযাত্রাও হয়। গিরিময়দান থেকে শুরু হওয়া ওই পদযাত্রা খরিদা, বড়বাতি, গোলবাজার, গেটবাজার হয়ে টাউন থানার সামনে শেষ হয়।