নির্বাচন শেষ। প্রার্থীদের ভাগ্য এখন ইভিএম বন্দি। এরই মধ্যে সন্ত্রাস ও রিগিং করে ভোটে করার অভিযোগে একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলল বিরোধীরা।
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস পুনর্নির্বাচন চেয়েছে ১৬৮টি বুথে। এর মধ্যে রয়েছে কেশপুর বিধানসভা এলাকারই ১৩৮টি বুথ। এ ছাড়াও রয়েছে ঘাটালে ২০, পিংলায় ৭ ও সবংয়ের ৩টি বুথ। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৯৫টি বুথে ফের ভোট গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে কেশপুর বিধানসভা এলাকায় রয়েছে ৮২টি বুথ। আর ঘাটালের ১৩টি বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়েছে বামেরা। বিজেপি-র পক্ষ থেকে কেশপুর, ঘাটাল গ্রামীন এলাকা ও পিংলা তিনটি এলাকার সমস্ত বুথেই পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার কথায়, “কমিশন যদি পুনর্নির্বাচনের না করে তাহলে বুঝতে হবে সরকার ও কমিশনের মদতেই গণতন্ত্রকে হত্যা করা হল।”
নিবার্চন ঘোষণার পর থেকেই শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সোচ্চার হয়েছিল বিরোধীরা। সোমবার নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনের পরেও ফের বিরোধীদের উপর তৃণমূল আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ আনল বিরোধী সব দলই। আর এই সন্ত্রাস মোকাবিলায় গণনার পরেও ন্যূনতম ১০ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার দাবি জানাল কংগ্রেস। ঘাটালের বামফ্রন্ট প্রার্থী তথা সিপিআইয়ের জেলা সভাপতি সন্তোষ রাণা বলেন, “নির্বাচনের পর থেকেই তো চারদিকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকেই ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। প্রশাসন ও কমিশনকেই সন্ত্রাস মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে হবে।” একই দাবি বিজেপি-র জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়েরও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য সমস্ত সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এর জন্য মানুষকে ধন্যবাদ। তারই সঙ্গে আমাদের কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, যেভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, সেভাবে শান্তিতেই সকলে থাকুন। কেউ কোনও প্ররোচনায় পা দিয়ে বিবাদে জড়াবেন না।”
রাজনৈতিক দলগুলির আশঙ্কা, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এখন যে সন্ত্রাস চলছে তা অতি সামান্য। গণনা শেষ হলেই সন্ত্রাসের মাত্রা বাড়বে। কেন এই আশঙ্কা? বিরোধীদের মতে, এখন সন্ত্রাস হচ্ছে তাঁদের উপরেই যাঁরা প্রকাশ্যে বিরোধী দলের হয়ে প্রচার করেছে, বিরোধীদের সমর্থন করেছে তাঁদের উপর। কিন্তু গণনার পর বুথ ভিত্তিক ফল জানা যাবে। এখন শাসক দল যে সমস্ত বুথে বেশি ভোট পাবে বলে আশা করে রয়েছে, সব ক্ষেত্রেই এমনটা হবে তা নয়। যে কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য সঠিকভাবে ভোট হয়েছে সেখানে ভোটারেরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। ফলে বুথ ভিত্তিক ফলে পরিষ্কার হয়ে যাবে কোন দলের প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন। যে সমস্ত বুথে শাসক দলের ফল খারাপ হবে সেখানেই ফের নতুন করে সন্ত্রাস চালানো হবে। তাই প্রশাসন ও কমিশনকে নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাস মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন বিরোধী সব দলই।