চোখে জল, কর্মিসভায় বলতে উঠে শৈশবে ডুব দিলেন সন্ধ্যা

শনিবারই দলের সাংগঠনিক সভায় তাঁকে অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। তৃণমূল নেতারা বলেছিলেন, তিনি প্রচারে না যাওয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের কথা শুনতে হচ্ছে। রবিবার তাই কর্মিসভায় গিয়ে মেদিনীপুরের তারকা প্রার্থী বার্তা দিলেন, তিনি গরিবের দুঃখ বোঝেন। কারণ বহু লড়াই করে তিনি আজকের জায়গায় এসে পৌঁছেছেন।

Advertisement

বরুণ দে

শালবনি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১৬
Share:

শিরোমনির কর্মিসভায় সন্ধ্যা রায়কে অভ্যর্থনা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

শনিবারই দলের সাংগঠনিক সভায় তাঁকে অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। তৃণমূল নেতারা বলেছিলেন, তিনি প্রচারে না যাওয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের কথা শুনতে হচ্ছে। রবিবার তাই কর্মিসভায় গিয়ে মেদিনীপুরের তারকা প্রার্থী বার্তা দিলেন, তিনি গরিবের দুঃখ বোঝেন। কারণ বহু লড়াই করে তিনি আজকের জায়গায় এসে পৌঁছেছেন।

Advertisement

এ দিন পিরাকাটায় কর্মিসভা ছিল সন্ধ্যাদেবীর। সেখানে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও অভিনেত্রীকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন। বিশেষ করে মহিলারা। সেই জমায়েতের সামনে বলেন, “আমি মানুষের দুঃখ-কষ্ট বুঝি। গরিব মানুষের খিদের জ্বালা কী, জানি। আমিও একদিন গরিব ছিলাম। খিদের জ্বালা নিয়ে দেশের বাড়ি ছেড়ে অর্থের জন্য শহরে এসেছিলাম।” ‘বাবা তারকনাথ’ ছবির ‘সুধা’ এরপর বলে চলেন, “তখন আমার ১২ বছর বয়স। নায়িকা হইনি। অন্য চরিত্রে অভিনয় করি। পারিশ্রমিক বাবদ ৫ টাকা করে পেতাম। যখন নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করলাম, তখন আমার বয়স ১৫- ১৬ হবে। আজ নিজেকে ধন্য মনে করি।” বলতে বলতে চোখে জল আসে অভিনেত্রীর। নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, “আমি শিল্পী মানুষ। আবেগপূর্ণ মন। তাই কিছু বলতে গেলেই চোখে জল চলে আসে।”

কেন তিনি রাজনীতিতে, রবিবার তারও ব্যাখ্যা দেন তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থী। কর্মিসভায় তিনি বলেন, “আমি এখানে আসতে চাইনি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসি। তাই তাঁর ডাকে চুপ করে থাকতে পারিনি।” সন্ধ্যাদেবীর কথায়, “আমি মানুষকে ভালবাসি। যত দিন পর্যন্ত পারব, মানুষের জন্য কাজ করব।”

Advertisement

শনিবার মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় দলেরই কয়েকজন নেতা সন্ধ্যাদেবীর কাছে সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন, ‘দিদি, আপনি কত দিন সময় দিতে পারবেন। সকলে আপনাকে দেখতে চাইছে। কর্মিসভায় গিয়ে আমাদের কথা শুনতে হচ্ছে।’ সভায় সামনে আসে দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলও। কয়েকজন নেতা নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। সন্ধ্যাদেবী অবশ্য সভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি অন্য জগতের মানুষ। প্রচারে অল্প ব্যবহার করলে তাঁর সুবিধে হবে। এ দিন অবশ্য তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। চারটি কর্মিসভা করেন তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থী। সকালে যান মেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরোমণি। সেখান থেকে শালবনি ব্লকের পিরাকাটা। দুপুরে মেদিনীপুরে ফিরে খাওয়াদাওয়া সেরে বিকেলে যান সদর ব্লকের চাঁদড়ায়। সন্ধ্যায় ফের মেদিনীপুর শহরে কর্মিসভা করেন। শিরোমণিতে একেবারে বরণ করে নেওয়া হয় ‘বাবা তারকনাথ’ ছবির ‘সুধা’কে। গাড়ি থেকে নামতেই একদল মহিলা তাঁকে বরণ করেন। কানে বাজছিল শঙ্খধ্বনি। মঞ্চের সামনে রাখা ছিল ১৫টি প্রদীপ। সন্ধ্যাদেবী মঞ্চে উঠতেই বাঁশির সুরে বেজে ওঠে ‘মঙ্গলদীপ জ্বেলে অন্ধকারে দু’চোখ আলোয় ভরো প্রভু...’।

মঞ্চে তখন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় হাজির। পরে অভিনেত্রী প্রার্থী বলেন, “শিরোমণিতে এই প্রথম এলাম। সকলে প্রীতি-শুভেচ্ছা নেবেন। আপনারা আমাকে আশীর্বাদ দোওয়া করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি অন্তর দিয়ে ভালবাসি। উন্নয়নের জন্য মমতার চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন