চোদ্দো মাসেও হয়নি রাস্তা, যানজটে নাকাল

কাজ শেষ হয়নি ১৪ মাসেও। দিঘা-কলকাতা সড়কে চণ্ডীপুর বাজারে বাইপাস রাস্তার কাজ ঢিমেতালে হওয়ায় যানজটে নাকাল হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। চণ্ডীপুর বাজারে যানজট সমস্যা দূর করতে বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ১৪ মাস আগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০১:০৮
Share:

দিঘা-মেচেদা সড়কে বাড়ছে যানজট।

কাজ শেষ হয়নি ১৪ মাসেও। দিঘা-কলকাতা সড়কে চণ্ডীপুর বাজারে বাইপাস রাস্তার কাজ ঢিমেতালে হওয়ায় যানজটে নাকাল হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

চণ্ডীপুর বাজারে যানজট সমস্যা দূর করতে বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ১৪ মাস আগে। তারপর থেকে বছর ঘুরলেও মাত্র এক কিলোমিটারের কম দৈর্ঘ্যের ওই রাস্তার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চণ্ডীপুর বাজারে নিত্যদিন যানজটের শিকার হচ্ছেন কলকাতা থেকে দিঘায় যাতায়াতকারী পর্যটক ছাড়াও নন্দীগ্রাম, এগরা ও কাঁথির বাসযাত্রীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে ওই রাস্তা সংস্কার করতে হবে। তৃণমূল পরিচালিত চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ স্বপন প্রধান বলেন, “বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হয়নি এই অভিযোগ সঠিক। এতে ঠিকাদার সংস্থার কোনও গাফিলতি নেই। ওই বাইপাস রাস্তা তৈরির জন্য রাস্তার পাশের গাছ কাটা নিয়ে সমস্যার কারণে কাজে কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে বাইপাস রাস্তার বেশিরভাগ কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশের কাজও চলছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বর্ষার আগেই রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।”

চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা-কলকাতা সড়কের ধারে চণ্ডীপুর বাজার জেলার অন্যতম বড় বাজার। চণ্ডীপুর ব্লক ছাড়াও নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক, খেজুরি ১ ও ২ ব্লক, ভগবানপুর ১ ও ২ ব্লক ও পটাশপুরের একাংশের বাসিন্দারা এই বাজারের দোকানে বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটা করেন। তাছাড়া অনেকে এই অঞ্চলের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতেও আসেন। ফলে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত চণ্ডীপুর বাজারে লোকজনের ভিড় লেগেই থাকে। আর কলকাতা থেকে দিঘাগামী পর্যটকদের বাস, ট্যাক্সি ছাড়াও কাঁথি, রামনগর, এগরা, খেজুরি, নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতা-সহ বিভিন্ন দুরপাল্লার বাস চণ্ডীপুর বাজারের উপর দিয়েই চলাচল করে। ফলে চণ্ডীপুর বাজারের কাছে প্রায় এক কিলমিটার দীর্ঘ রাস্তায় প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল ৭ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ও বিকেল সাড়ে ৪ টা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বাজারের কাছে সড়কের উপর বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় যানজট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ রয়েছে।

Advertisement

শেষ হয়নি রাস্তার কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে যানজট সমস্যা দূর করতে উদ্যোগী হন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। চণ্ডীপুর বাজারের কাছে প্রধান সড়কে যানজট দূর করতে বাজারের কাছে মণিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে কালিকাখালি গার্লস হাইস্কুল পর্যন্ত মগরাজপুর খালের বাঁধ বরাবর প্রায় ৮০০ মিটার মোরাম রাস্তাটিকে পাকা করে বাইপাস রাস্তা হিসেবে তৈরির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য শিশিরবাবু সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ওই বাইপাস রাস্তা ও একটি কালভার্ট তৈরির জন্য প্রায় ৯৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। প্রথম পর্যায়ে ৪০০ মিটার পাকা রাস্তা তৈরির জন্য ৪১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি ৪০০ মিটার রাস্তা পাকা করার জন্য ৪১ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। এছাড়াও ওই রাস্তায় একটি হিউম পাইপ কালভার্ট তৈরির জন্য ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।

২০১৩ সালের ১৭ মার্চ ওই বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজের শিলান্যাস করেন শিশিরবাবু। ওই বাইপাস রাস্তা তৈরির জন্য নিযুক্ত ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করলেও এখনও রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি বলে অভিযোগ। প্রথম পর্যায়ের ৪০০ মিটার পাকা রাস্তা তৈরির কাজ, কালভার্ট তৈরি হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের পাকা রাস্তার কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাইপাস রাস্তা নির্মাণের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়নি। এরফলে চণ্ডীপুর বাজারে এখনও যানজট সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি মাঝে-মধ্যেই বাজারের মধ্যে সড়কে দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ। স্বপন প্রধান বলেন, “ওই রাস্তার ধারে গাছ কাটা নিয়ে কিছুটা সমস্যা হওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা দেরি হয়েছে। আর বর্তমানে মগরাজপুর খাল সংস্কারের কারণে রাস্তার কাজ কিছুটা ধীরে হচ্ছে। তবে বাইপাস রাস্তার বেশিরভাগ অংশের কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করে ওই বাইপাস চালু করা হবে।”

ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন