চণ্ডীপুরে চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ

সপ্তাহখানেক আগে চুরি হয়েছিল গ্রামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তাতে জড়িত থাকার সন্দেহে এক ভ্যানচালককে ডেকে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বৃন্দাবনপুর গ্রামের এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে শঙ্কর দোলইয়ের (৪৫)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০০:৪৫
Share:

সপ্তাহখানেক আগে চুরি হয়েছিল গ্রামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তাতে জড়িত থাকার সন্দেহে এক ভ্যানচালককে ডেকে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বৃন্দাবনপুর গ্রামের এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে শঙ্কর দোলইয়ের (৪৫)। পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “চোর সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে ধরে গণপিটুনির জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ৪০ জনের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক।”

Advertisement

বৃন্দাবনপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন পড়িয়ার বাড়িতে দশ দিন আগে একদল দুষ্কৃতী হানা দিয়ে সোনার গয়না ও নগদ টাকা মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী ছিনতাই করে পালায়। মনোরঞ্জনবাবু চণ্ডীপুর থানায় অভিযোগ জানান। তবে পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি। অভিযোগ, মনোরঞ্জনবাবু ও তাঁর প্রতিবেশীরা কাণ্ডপশরা গ্রামের বাসিন্দা শঙ্করবাবু ও তাঁর এক জামাইকে ঘটনায় জড়িত বলে সন্দেহ করে।

শঙ্করবাবুর পরিজনের অভিযোগ, মঙ্গলবার মনোরঞ্জনবাবুর এক ভাইপো-সহ চার জন শঙ্করবাবুর বাড়িতে গিয়ে ভাড়া আছে বলে তাঁকে ভ্যানরিক্সা-সহ বৃন্দাবনপুর বাজারে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর তাঁকে ওই গ্রামের মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে একদল গ্রামবাসী লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ভ্যানরিক্সায় চাপিয়ে চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ফেলে রেখে আসা হয়। পরে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই তাঁর মৃত্যু হয়। শঙ্করবাবুর ছেলে মহিষাদল রাজ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রবি দোলই চণ্ডীপুর থানায় মনোরঞ্জন পড়িয়া-সহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

রবি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মনোরঞ্জনবাবুর ভাইপো-সহ চারজন শঙ্করবাবুকে ডেকে নিয়ে যায়। তাঁর কথায়, “রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাবার ফোন থেকেই মনোরঞ্জনবাবুর এক ভাইপো আমাকে ফোন করে জানায়, যে বাবা আহত হয়েছে। কী হয়েছে জানতে চাইলেও আমাকে কিছু বলেনি।” রবি জানান, বাড়ির লোকজনকে ফোনে জানাই। কিছুক্ষণ পরে একদল লোক বাড়িতে এসে পুলিশে কিছু না জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগ। রবিকেও ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, “চুরির ঘটনার সঙ্গে বাবা কোনও ভাবেই জড়িত ছিল না। স্রেফ সন্দেহের বশে ওরা নৃশংসভাবে বাবাকে খুন করেছে। আমি চাই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি হোক।”

কাণ্ডপশরা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় তৃণমূল জেলা পরিষদ সদস্য অশ্বিনী দাস বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতেই পারে। পুলিশ তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু স্রেফ সন্দেহ করে কাউকে এ ভাবে মারার ঘটনা নিন্দনীয়। আমরা চাই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন